আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ায় থাকার সময় বাড়ল স্নোডেনের
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনকে আরও কয়েক বছর রাশিয়ায় থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘স্নোডেনের রাশিয়ায় অবস্থান করার অনুমতি আরও কয়েক বছর বাড়ানো হয়েছে।’
মার্কিন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২৯ বছর বয়সী চেলসি ম্যানিংয়ের সাজা মওকুফ করে দেওয়ার ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রুশ কর্তৃপক্ষ স্নোডেন আশ্রয় দেওয়ার মেয়াদ বাড়ালো। উইকিলিকসের কাছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাত লাখ গোপন নথি ফাঁস করার দায়ে ২০১৩ সালে ম্যানিং দোষী সাব্যস্ত হন। তাকে ৩৫ বছর কারাদ- দেওয়া হয়। তিনি ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করতেন। ব্র্যাডলি ম্যানিং হিসেবে অভিযুক্ত হলেও পরবর্তীতে হরমোন থেরাপি নিয়ে তিনি নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে চেলসি ম্যানিং নাম ধারণ করেন। সাজা মওকুফ হওয়ায় ২০৪৫ সালের পরিবর্তে চলতি বছরের ১৭ মে মুক্তি পাচ্ছেন ম্যানিং।
এদিকে, ম্যানিংকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া এক টুইটার বার্তায় স্নোডেন বলেন, ‘পাঁচ মাসের মধ্যেই তুমি মুক্তি পাচ্ছো। চেলসি, সবার জন্য তুমি যা করেছো, তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আরও কিছুদিন একটু শক্ত থাকো।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭০-এর দশকে সিআইএ ও অন্য গোয়েন্দা সংস্থার অবৈধ কর্মকা- নিয়ে কংগ্রেসনাল তদন্তের জন্য গঠিত চার্চ কমিটির ১৫ সদস্য যৌথভাবে এক চিঠি লিখেছেন। তারা রাশিয়ায় স্নোডেনের ‘অগ্রহণযোগ্য নির্বাসনের’ অবসান করার জন্য ওবামার প্রতি আহ্বান জানান। আট পৃষ্ঠারও বেশি ওই চিঠিতে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। তারা ওবামাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, স্নোডেনের ফাঁসের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের কিছু দুর্বলতা সামনে এসেছে। আর তাতে বেশ কিছু জায়গায় জরুরি সংস্কার আনা সম্ভব হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ‘স্নোডেন যে আইন ভঙ্গ করেছেন সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আগে যারা একই আইন ভঙ্গ করেছিলেন তখন তারা ছাড় পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, স্নোডেনের কর্মকা- ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের জন্য ছিল না, সংস্কার আনার তাড়নাবোধ থেকেই তা করা হয়েছে।’
এডওয়ার্ড স্নোডেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ-র সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ২০১৩ সালে গোপন নজরদারির বিভিন্ন তথ্য ফাঁস করে সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন স্নোডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এই ফাঁসের ঘটনায় সামনে আসে নিজ দেশের নাগরিকদের ওপর মার্কিন গোয়েন্দা নজরদারির ভয়াবহতা। তথ্যফাঁসের পর থেকেই স্নোডেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নিজ দেশ থেকে। যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে,তাতে তার অন্তত ৩০ বছরের কারাদ- হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ানটেড ব্যক্তির তালিকায় রয়েছে তার নাম। বর্তমানে তিনি রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
"