আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ৩১ মে, ২০২০

জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু

বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক আফ্রিকান আমেরিকান নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে টানা চতুর্থ দিনে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের বাইরে হাজার হাজার মানুষ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ দিন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে মিনেসোটা, নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়া। খবর বিবিসির।

গত সোমবার শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে ৪৬ বছর বয়সি কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিনিয়াপোলিসসহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি শহরে পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের এক কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু দিয়ে তাকে মাটিতে চেপে ধরে রেখেছেন। এ সময় ফ্লয়েড বলেছেন, ‘প্লিজ, আমি শ্বাস নিতে পারছি না’, ‘আমাকে মারবেন না।’ ফ্লয়েডের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ২০ ডলারের একটি জালনোট ব্যবহার করেছিলেন। তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের গাড়িতে নেওয়ার আগে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, হাতকড়া পরাতে বাধা দিচ্ছিলেন তিনি।

তবে পুলিশের সঙ্গে ফ্লয়েড কীভাবে সংঘর্ষে জড়ালেন তা ভিডিওতে দেখা যায়নি। এ ঘটনায় নিরস্ত্র ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু রাখা ৪৪ বছর বয়সি পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগে ডেরেক শভিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার তার আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। এ ঘটনাকে ‘ভয়ানক ব্যাপার’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের সামনে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তাদের হাতে জর্জ ফ্লয়েডের ছবি ছিল এবং তারা স্লোগান দেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’

বিক্ষোভের ঘটনায় হোয়াইট হাউস সাময়িকভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয় এবং এর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রবল বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয় মিনিয়াপোলিস এবং সেইন্ট পল শহরে। কিন্তু শুক্রবার কারফিউ উপেক্ষা করে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় একাধিক ভবন এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, শিকাগো, ডেনভার, হাউসটন, লুইভিল, ফিনিক্স, কলাম্বাস এবং মেমফিসসহ অনেক শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সহিংস সংঘর্ষ হয়। আটলান্টায় সংবাদমাধ্যম সিএনএনের দফতরের পাশেই ভবনে ভাঙচুর এবং পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার মিনিয়াপোলিসের একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। ফ্লয়েডের ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর প্রায় ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ধরে হাঁটু চেপে রেখেছিলেন শভিন। শেষ তিন মিনিট ফ্লয়েডের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি, তিনি অসাড় হয়ে গিয়েছিলেন। হাঁটু সরানোর দুই মিনিট আগে অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ডান হাতের কব্জি ধরে নাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন কোনো স্পন্দন নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close