আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনার মহামারি
যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার বেড়ে ১৪.৭
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার বেড়ে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেওয়া লকডাউন ও অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে দেশটিতে এপ্রিলেই দুই কোটি ৫ লাখ লোক চাকরি হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ১৯৩০ সালের মহামন্দার পর যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার কখনোই এত বেশি দেখা যায়নি।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির প্রবৃদ্ধি এবং পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির হারেও এখন বেহাল দশা। অথচ দুই মাস আগে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির এ দেশটিতে বেকারত্বের হার ছিল ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম, মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
এটা ঐতিহাসিকভাবেই অভূতপূর্ব ঘটনা। মহামারির কবল থেকে সেরে উঠার লক্ষ্যে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে কোমায় পাঠিয়েছিলাম। এ কারণেই এ তীব্র বেকারত্বের দেখা মিলেছে, বলেছেন কর্নওয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এরিকা গ্রোশেন।
দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনেও মার্কিন অর্থনীতির সব খাতেই নি¤œমুখী ধারা দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তাদের প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারানো লোকের সংখ্যা ১৪ দশমিক ৭ শতাংশের বেশি হতে পারে বলেও ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চাকরি হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশের বেশি পরে চাকরি ফিরে পাবেন বলেও মনে করছে শ্রম মন্ত্রণালয়। বেকারদের অনেকে অর্থনীতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে এমন আশা করলেও অর্থনীতিবিদরা মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, নতুন বাস্তবতায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে তারা বিধিনিষেধ শিথিলের পর খুলে দেওয়া রেস্তোরাঁগুলোর উদাহরণ টানছেন। বলছেন, এ রকম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নতুন নিয়মকানুন আত্মীকরণ করতে পারে, যেখানে একসঙ্গে বেশি লোক কাজ করার সুযোগ থাকবে না। তেমনটা হলে অনেকেই চাকরি হারাবেন কিংবা তাদের শ্রমঘণ্টা কমে যাবে, বলছেন তারা। লকডাউন পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারবে না বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
এমনকি অস্থায়ী বেকারত্বও স্থায়ী হয়ে যেতে পারে, যদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো না টেকে কিংবা তারা তাদের ব্যবসাপদ্ধতি বদলে ফেলে, তাহলে নাটকীয়ভাবেই কর্মী সংখ্যার ধরন ও সংখ্যায় পরিবর্তন আসবে, বলেছেন গ্রোশেন।
অবশ্য নতুন করোনাভাইরাস কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকেই সংকটে ফেলেনি; বিশ্বের অধিকাংশ দেশের প্রবৃদ্ধি ও উৎপাদনেও আঘাতে হেনেছে। যুক্তরাজ্যে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে মন্দা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। শুক্রবার কানাডা সরকার তাদের দেশে বেকারত্বের হার এপ্রিলে ৫ দশমিক ২ থেকে বেড়ে ১৩ শতাংশতে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে।
শ্রমশক্তির এক তৃতীয়াংশই হয় চাকরি হারিয়েছে না হয় আগের তুলনায় অর্ধেক সময় কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে, বলেছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা।
ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এপ্রিলে ২ কোটির বেশি লোকের চাকরি হারানোকে ‘প্রত্যাশিত, আশ্চর্যজনক নয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
এমনকি ডেমোক্রেটরাও এর জন্য আমাকে দায়ী করছে না। আমি যা করতে পারি তাহলে অর্থনীতির চাকা ফের সচল করতে পারি, বলেছেন তিনি।
"