আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ মার্চ, ২০২০

ইতালিতে এক দিনেই ১৬৮ মৃত্যু

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অবরুদ্ধ ইতালিতে এক দিনেই ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে; মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩১ জনে। ইউরোপে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়া এ দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ১৪৯ জন। এই হিসাবে মঙ্গলবার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১০.৭ শতাংশ, আর মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৩৬ শতাংশ।

রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের মূল ভূখ- বাদ দিলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ইতালিতেই সবচেয়ে বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে ১ হাজার ৪ জন মঙ্গলবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন, আর ৮৭৭ জনকে রাখা হয়েছে নিবিড় পরিচর্যায়; মঙ্গলবার জানিয়েছে ইতালির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি।

নতুন রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মঙ্গলবার থেকে পুরো ইতালিতে চলাচলের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি জনসমাগম নিষিদ্ধ করার মত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর ফলে দেশটির সাড়ে ছয় কোটি মানুষ কার্যত অবরুদ্ধ দশার মধ্যে পড়ে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ইতালিকে পুরোপুরি নাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালি জুড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এ রকম ব্যাঘাত আর দেখা যায়নি।

নজিরবিহীন ‘লকডাউন’ আরোপের পর প্রথম দিন মঙ্গলবার দেশজুড়ে দোকান-রোস্তোরাঁ বন্ধ ছিল, শত শত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, রাস্তাঘাটও সব ফাঁকা ছিল।

৩ এপ্রিল পর্যন্ত ইতালিয়ানদের অপ্রয়োজনীয় সব ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে বাড়িতে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে সরকার। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ছড়ানোর কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠা সম্পদশালী উত্তরাঞ্চলে আগেই এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, পরে তা দেশব্যাপী বিস্তৃত করা হয়। সরকারের এ পদক্ষেপে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

রোমের একটি টিপটপ আবাসিক এলাকার একটি ল্যারিস রেস্তোরাঁর পরিচালক মারিও মোফ্রেদা বলেন, যেন রোজকেয়ামত নেমে এসেছে, আশপাশে কেউ নেই। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী সব রেস্তোরাঁ ও বার এখন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।

এটা পুরোপুরি বিপর্যয়। এতে কোনো কিছু হ্রাস পাবে না। এই লকডাউনের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে ভাইরাসের চেয়েও বেশি লোক মারা যাবে, বলেন মোফ্রেদা। তবে এ পদক্ষেপে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া প্রাদুর্ভাবের গতি কমে আসবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষগুলো।

এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়েছে ইতালি। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রাদুর্ভাব শনাক্ত হওয়ার পর এক দিনে দেড় শতাধিক লোকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে দেশটির প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠা লমবার্দি অসম্পূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন।

ইতালিতে মৃতদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ লমবার্দির লোক হলেও নভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এখন দেশটির সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে অপেক্ষাকৃত অনুন্নত দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তের সরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close