আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

করোনাভাইরাস

নতুন রোগী ফের বেড়েছে মৃত্যু বেড়ে ১৭৭৫

নতুন করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রভূমি চীনের হুবেই প্রদেশে নতুন রোগীর সংখ্যা তিন দিন কমার পর ফের বাড়তে শুরু করেছে, সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৭৫ জনে। এ পরিস্থিতিতে ভাইরাসের বিস্তার কমাতে হুবেই প্রদেশে চলাফেরার ওপর নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে চীন সরকার।

এই হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই গত বছরের শেষে করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। চীনে বিপুল সংখ্যক শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকায় বিশ্ব অর্থনীতিতেও অস্থিরতা বাড়ছে, জাপান আর সিঙ্গাপুর পড়েছে মন্দার ঝুঁকিতে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্যানুযায়ী, দেশটির মূল ভূখ-ে গত রোববার আরো ২ হাজার ৪৮ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আগের দিন নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯ জন।

সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৫৪৮ জনে। আর অন্তত ২৬টি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত রোববার চীনে মোট ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে নতুন এ করোনাভাইরাসে, এর মধ্যে হুবেই প্রদেশেই মারা গেছেন ১০০ জন। তাতে চীনের মূল ভূখ-ে নতুন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৭৭০ জনে।

প্রতিবেশী তাইওয়ানে গত রোববার প্রথম এ ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। চীনের মূল ভূখ-ের বাইরে এর আগে ফ্রান্স, হংকং, ফিলিপাইনে ও জাপানে চারজনের প্রাণ গেছে করোনাভাইরাসে। সব মিলিয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৭৭৫ জনে।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্যানুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৮৪৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আর চীনের বাইরে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের বেশির ভাগই চীন থেকে সংক্রমণ নিয়ে অন্য দেশে গেছেন। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উহানসহ কয়েকটি শহর গত জানুয়ারি থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গত রোববার হুবেই প্রদেশে যানবাহন চলাচলের ওপর নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। জরুরি সেবার গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো ধরনের যানবাহন বের না করতে বলা হয়েছে বাসিন্দাদের। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কল-কারাখানা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনো মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেনÑ তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close