আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

বাগদাদে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সামরিক ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। গতকাল রোববার ভোররাতের এ বিস্ফোরণগুলো রকেট হামলার কারণে ঘটে থাকতে পারে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। হামলায় কেউ হতাহত বা কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না তারা তাৎক্ষণিকভাবে তা বলতে পারেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বাগদাদের গ্রিন জোনের ভেতরে এই ঘাঁটির পাশেই যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। প্রায়ই এই দূতাবাসের কাছে বা কখনো কখনো দূতাবাসটিতেও রকেট হামলা হয়। কোনো পক্ষ এসব হামলার দায় স্বীকার না করলেও যুক্তরাষ্ট্র ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়া বাহিনীগুলোকে এসব হামলার জন্য দায়ী করে আসছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছে বেশ কয়েকটি রকেট আঘাত হেনেছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। হামলার সময় সতর্কতামূলক সাইরেনও বাজানো হয় বলে জানা গেছে।

ডিসেম্বরের শেষ দিকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় সামরিক ঘাঁটি কে-ওয়ানে রকেট হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের এক সেনা নিহত হওয়ার পর তার জের অনেক দূর গড়ায়। সেনা হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলে দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হাশেদ আল শাবি মিলিশিয়ার বাহিনীর একটি উপদলের ওপর বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে ৩০ জনেরও বেশি মিলিশিয়া নিহত হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যেই বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইরানি কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও তার ডান হাত বলে পরিচিত হাশেদের উপপ্রধান আবু মাহদি আল মুহান্দিস নিহত হন। তখনই এই দুই কমান্ডারের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের তাৎক্ষণিভাবে ইরাক ছাড়ার দাবি জানিয়েছিল হাশেদের উপদলগুলো।

এদিকে, তালেবান বলেছে সোভিয়েত বাহিনীর পরিণতি হবে মার্কিন সেনাদের। আফগানিস্তানের তালেবান আবারও দেশটি থেকে সব দখলদার মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকার সঙ্গে তালেবানের একটি সমঝোতা চুক্তি সই হতে যাচ্ছে বলে যখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম খবর দিচ্ছে তখন তালেবান ওয়াশিংটনের প্রতি এ আহ্বান জানাল।

তালেবান গত শনিবার আমেরিকাকে উদ্দেশ করে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিনিদের আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত বাহিনীর পরাজয় থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমেরিকানরা আফগানিস্তানে জোর করে থেকে যেতে চাইলে তাদের সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে যা ভোগ করেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনয়ন।

মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস গত সপ্তাহে তালেবানের সঙ্গে আমেরিকার চলমান আলোচনার কথা উল্লেখ করে জানিয়েছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শর্ত সাপেক্ষে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মতি দিয়েছেন। শর্তটি হচ্ছে, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের এক সপ্তাহ আগে থেকে তালেবানকে সহিংসতা বন্ধ রাখতে হবে। এক সপ্তাহ আফগানিস্তানের কোথাও তালেবান সশস্ত্র হামলা না চালালে বোঝা যাবে তারা চুক্তির শর্ত মেনে চলবে।

আমেরিকা প্রায় এক বছর ধরে আফগান সরকারকে পাশ কাটিয়ে তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়েছে। কিন্তু এসব আলোচনা আফগানিস্তানের জনগণের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনেনি।

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্টের দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তিতে তালেবান আফগানিস্তানে সহিংসতা ও সশস্ত্র হামলা বন্ধ রাখতে রাজি হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার সাক্ষাৎ করে তালেবানের এ মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close