আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

নারী সহকর্মীদের কমান্ডার হিসেবে চান না ভারতীয় সেনারা

ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নারী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বদানকারী পদ দেওয়াটা অনুচিত হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। নারীরা কোনো অংশেই পুরুষদের থেকে কম নন স্বীকার করে বলা হয়, কমান্ডিং অফিসার পদে নারীরা থাকলে বাহিনীর সদস্যরা, যাদের অধিকাংশই গ্রামাঞ্চল থেকে আসেন, তারা নারী অফিসারকে নাও মেনে নিতে পারেন।

১৯৯২ সাল থেকেই ভারতে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি শাখায় শর্ট সার্ভিস কমিশনড অফিসার হিসেবে নারীদের নিয়োগ করা শুরু হয়। সরাসরি যুদ্ধে নারীদের এখনো পাঠানোর নিয়ম নেই, তারা সহযোগী শাখাগুলোতে কাজ করেন।

সুপ্রিম কোর্টে আরো যুক্তি দেখানো হয়, নারীদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা পুরুষ অফিসারদের থেকে কম এবং যদি যুদ্ধবন্দী হিসেবে নারী অফিসাররা ধরা পড়েন শত্রু দেশের হাতে, তখন তাদের বেশি বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবেÑ এইসব যুক্তিও দেখানো হয়েছে।

এই মন্তব্যের পর সাবেক সেনা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আইনজীবীসহ অনেকেই এই পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের সমালোচনা করছেন। সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি চলছে, তারাও বলেছে মানসিকতার পরিবর্তন হলেই নারী অফিসারদের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ করা যায়।

এর আগে সেনাবাহিনীতে নারী অফিসারদের নিয়োগ করা নিয়ে প্রাথমিকভাবে আপত্তি তুলেছিলেন দেশের শীর্ষ সেনা অফিসারদের একাংশও। এদেরই মধ্যে ছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায় চৌধুরী। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এবং আরো কয়েকজন সিনিয়ার অফিসার আপত্তি করেছিলাম বাহিনীতে সরাসরি যুদ্ধের ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগের ব্যাপারে। কিন্তু সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিল, সেটা সেনা অফিসার হিসেবে আমরা মানতে বাধ্য।’

তিনি বলেন, তবে একবার যখন নারীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েইছে, তাহলে তাদের কেন তাদের কেন কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা যাবে না? নারী অফিসাররা যাতে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটা সুষ্ঠুভাবে করতে পারে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বাধা সরকারকেই দূর করতে হবে। ২০১০ সালে দিল্লি হাইকোর্ট নারী অফিসারদেরও স্থায়ী কমিশন্ড অফিসার হিসেবে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মামলাই এখন সুপ্রিম কোর্টে গেছে।

নারী সেনা অফিসারদের হয়ে যিনি সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি লড়ছেন, সেই সিনিয়ার অ্যাডভোকেট ঐশ্বর্য ভাট্টি বলেন, গত ২৬ থেকে ২৭ বছর ধরে নারী অফিসাররা সেনাবাহিনীর ১০টি শাখায় কাজ করছেন এবং তারা বারে বারে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তিনি বলেন, তারা কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় কাজ করেন, শত্রুর গুলির মুখেও তাদের পড়তে হয়। বাহিনীর পুরুষ অফিসারদের যত বিপদের ঝুঁকি নিতে হয়, ওই এলাকায় নিযুক্ত নারী অফিসারদেরও ঝুঁকি ঠিক ততটাই। কিন্তু তবুও নারীদের স্থায়ী কমিশন্ড অফিসার হতে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে একই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেও নারী অফিসাররা দ্বিতীয় শ্রেণির অফিসার হয়ে থেকে যাচ্ছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close