আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৮ নভেম্বর, ২০১৯

অভিশংসন শুনানি

ডাক পড়ল ট্রাম্পের

নিজের অভিশংসন তদন্তের শুনানিতে এবার ডাক পড়ল খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আগামী ৪ ডিসেম্বর তাকে এ-সংক্রান্ত শুনানিতে হাজির হওয়ার ‘আমন্ত্রণ’ জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। এ তদন্ত নিয়ে দফায় দফায় ট্রাম্পের বাক্যবাণের মধ্যেই এর শুনানিতে ডাক পড়ল তার। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এর আগে চলমান অভিশংসন তদন্তে সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিউলিয়ানিসহ আরো দুজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন তিনি। অভিযুক্ত অন্য দুজন হচ্ছেন ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা ডেভিড হোমস ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গর্ডন সোদল্যান্ড। ফক্স টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যাচারের দায়ে তাদের সবার বিচার দাবি করেন ট্রাম্প। তবে কংগ্রেসের নিম্নœকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটির ডেমোক্র্যাট দলীয় চেয়ারম্যান জেরল্ড ন্যাডলার জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে হয় শুনানিতে হাজির হতে হবে; অন্যথায় এ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করা থেকে তাকে বিরত থাকতে হবে। বিবিসি জানিয়েছে, শুনানিতে হাজির হলে সাক্ষীদের প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন তিনি।

এক বিবৃতিতে প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান জেরল্ড ন্যাডলার জানিয়েছেন, আগামী মাসের শুনানিতে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের কাছে চিঠি লিখেছেন।

জেরল্ড ন্যাডলার বলেন, প্রেসিডেন্ট যেকোনো একটি পছন্দ বেছে নিতে পারেন। তিনি অভিশংসন শুনানিতে প্রতিনিধিত্ব করার এই সুযোগটি নিতে পারেন। অন্যথায় তিনি এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে অভিযোগ তোলা বন্ধ করতে পারেন। আমার প্রত্যাশা, তিনি তদন্তে অংশ নেওয়াকেই বেছে নেবেন; সেটা নিজের সরাসরি উপস্থিতি কিংবা প্রতিনিধির মাধ্যমেই হোক! তার আগে অন্য প্রেসিডেন্টরাও একই কাজ করেছেন।

চিঠিতে জেরল্ড ন্যাডলার উল্লেখ করেছেন, ঐতিহাসিক ও সাংবিধানিক ভিত্তির আলোকে নিজের অভিশংসন নিয়ে আলোচনার জন্য শুনানিতে উপস্থিত হওয়া ট্রাম্পের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ।

আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে শুনানিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে ট্রাম্পকে সময় বেঁধে দিয়েছেন জেরল্ড ন্যাডলার। এর আলোকেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ওই ফোনালাপ ফাঁস হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় ওঠে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপে দেখা যায়, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে রীতিমতো চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প। ওই ফোনালাপের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্য আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করার পর ট্রাম্পের অভিশংসনের দাবি সামনে আসে। তাকে প্রেসিডেন্সি থেকে সরাতে তদন্ত শুরু করে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ। তবে এই তদন্তকে ন্যক্কারজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। তার দাবি, তাকে অভিশংসনের ক্ষমতা বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেই। তবে এমন দাবির মধ্যেই নিজের অভিশংসন তদন্তের শুনানিতে ডাক পড়ল তার।

তদন্তে গত দুই সপ্তাহে ১২ জন প্রত্যক্ষদর্শী প্রকাশ্য শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। এতে অংশ নিয়ে খোদ হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারাই বলছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপ স্বাভাবিক ছিল না। রয়টার্স জানিয়েছে, এই তদন্তে ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি হুমকির মুখে পড়েছে; এমনকি ২০২০ সালে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণকেও এটি অনিশ্চিত করে তুলেছে। সূত্র : বিবিসি, ফক্স নিউজ, রয়টার্স।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close