আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে শ্রীলঙ্কায় ভোট

ইস্টারের পরবে সন্ত্রাসী হামলায় ২৫০-এরও বেশি মানুষ নিহতের সাত মাস পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ২০০৯ সালে দেশটিতে কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধের অবসানের পর এ নিয়ে তৃতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল শনিবারের নির্বাচনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী লড়লেও ব্যালটে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার নাম নেই বলে জানিয়েছে বিবিসি।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র উৎসব ইস্টারের পরবে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে সিরিসেনা নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। দ্বীপরাষ্ট্রটির বিভিন্ন চার্চ ও নামকরা হোটেলগুলোতে ২১ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিসংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ওই সমন্বিত হামলায় অন্তত ২৫৩ জন নিহত হয়েছিল। সিরিসেনা সরকার পরে নিজেদের ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতার’ কথা স্বীকার করে নেয়। বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর কারণে এবার ভোটারদের দুই ফুট লম্বা ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে দেশটির নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

প্রার্থী তালিকায় তিন ডজন নাম থাকলেও ভোটারদের চোখ থাকবে মূলত দুজনের ওপরÑ সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের ভাই গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং ১৯৯৩ সালে তামিল গেরিলাদের হামলায় নিহত প্রেসিডেন্ট রানাসিংয়ে প্রেমাদাসার ছেলে সুজিত প্রেমাদাসা। গোতাবায়া ভাইয়ের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে লিবারেশন টাইগারস অব তামিল ইলম (এলটিটিই) গেরিলাদের বিরুদ্ধে লড়াই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। অন্যদিকে সুজিতের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাধান্য পেয়েছে গৃহায়ন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ নানা সামাজিক ইস্যু। ইস্টারে সন্ত্রাসী হামলার পর ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার বিষয়টি তার প্রচারণাতেও ছাপ ফেলেছে। প্রেসিডেন্ট হলে তামিল গেরিলাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়কার সেনাপ্রধান শরত ফনসেকাকে জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব দেবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে এপ্রিলের ওই হামলা রাজাপাকসে ভাইদের জনপ্রিয়তাই অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে; নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কঠোর অবস্থান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিজদের মধ্যে গোতাবায়ার অবস্থান শক্তিশালী করেছে, বলছেন পর্যবেক্ষকরা। বিবিসি লিখেছে, মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে শ্রীলঙ্কার এ নির্বাচনে নয়াদিল্লি ও বেইজিংও থাকছে।

লঙ্কান রাজনৈতিক মহলে সুজিতকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ঘেঁষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অন্যদিকে রাজাপাকসে বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটাররা সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীকে পছন্দের ক্রম অনুযায়ী বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কোনো প্রার্থী মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি পেলে তিনি এমনিতেই জয়ী হবেন; সে রকম কিছু না ঘটলে দেখা হবে ভোটারদের পছন্দের ক্রম। গণনা শেষে আগামীকাল সোমবারের মধ্যেই লঙ্কানরা কাকে তাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছেন তা জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close