আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হচ্ছে মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণকবর উদ্ঘাটনের ঘটনায় সেনা সদস্যদের বিচার করতে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি করতে যাচ্ছে মিয়ানমার। গত শনিবার দেশটির সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তদন্তে দেখা গেছে রাখাইনের গু-দার পিয়ান গ্রামে নির্দেশনা অনুসরণের দুর্বলতা ছিল সেনা সদস্যদের। জানানো হয়, সামরিক বিচার ব্যবস্থার অধীনে এসব সেনা সদস্যদের কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি করা হবে। তবে কতজন সেনা সদস্য বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে বা কবে এই কোর্ট মার্শাল অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাতে ৭ লাখের বেশি মানুষ। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাখাইনের গু-দার পিয়ান গ্রামে অন্তত পাঁচটি গণকবরের সন্ধান দেয় মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি। বার্তা সংস্থাটি জানায়, সেনা সদস্য ও বৌদ্ধ গ্রামবাসীরা বন্দুক, ছুরি, রকেট লাঞ্চার ও গ্রেনেড নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়। বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা জানায় এই ঘটনায় শত শত মানুষ হত্যা করা হয়। পরে লাশগুলো গণকবরে সমাহিত করা হয়।

তবে মিয়ানমার সরকার হামলার খবর অস্বীকার করে জানায় গণকবরে পাওয়া লাশগুলো সন্ত্রাসীদের। ওই সময়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, প্রায় ৫০০ গ্রামবাসী তাদের ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

গত শনিবার সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংওরে কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম রাখাইনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সামরিক আদালত। সেখানকার এক গ্রামে কিছু ঘটনায় নির্দেশনা অনুসরণে সেনা সদস্যদের দুর্বলতা পাওয়া গেছে বলে বলে জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতার কারণে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে চায় জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। গত মাসে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে গণহত্যার উদ্দেশ্যে যৌন নিপীড়নকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের আওতায় নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়। তবে সেনাবাহিনী এই অভিযোগ বরাবরই জোরালোভাবে অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, পুলিশ চেকপোস্টে প্রাণঘাতী হামলার পর বৈধ অভিযান চালিয়েছে তারা।

মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলে আসছে, রাখাইনে সহিংসতার কারণে সেনা সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করতে খুব কম পদক্ষেপই নিয়েছে মিয়ানমার।

এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আলাদা এক ঘটনায় ১০ রোহিঙ্গা গ্রামবাসীকে হত্যায় সেনা সদস্যরা সহযোগিতা করেছে বলে স্বীকার করে মিয়ানমার। এই ঘটনায় চার কর্মকর্তা ও তিন সেনা সদস্যকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। তবে এ বছরের মে মাসে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরা এখন আর আটক নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close