আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

‘মহাশক্তিশালী’ হারিকেন ডোরিয়ান বাহামায় আঘাত হেনেছে

ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে বাহামাসের গ্রেট আবাকো ও গ্রান্ড বাহামা দ্বীপে তা-ব চালাচ্ছে পাঁচ মাত্রার হারিকেন ডোরিয়ান।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু করার পর থেকে আটলান্টিক অঞ্চলের দ্বিতীয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় এটি। আর বাহামাসে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী হারিকেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, গত রোববার রাতে আবাকো দ্বীপের এলবো কে এলাকা দিয়ে ডোরিয়ান যখন স্থলভাগে উঠে আসে, তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হওয়া আকারে ৩৫৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

এ সময় প্রবল ঝড়ো হওয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৮ থেকে ২৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে উপকূল প্লাবিত হয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, প্রলয়ঙ্করী এ হারিকেনের তা-বে বহু ঘরের ছাদ উড়ে গেছে, জলোচ্ছ্বাস আর প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে অনেক জায়গা।

এনএইচসি বলেছে, মহাবিপজ্জনক হারিকেন ডোরিয়ান যে পথে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে এ ঝড়ের মূল অংশটি গ্রেট আবাকো দ্বীপ ও গ্রান্ড বাহামা দ্বীপে তা-ব চালিয়ে গতকাল সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ফ্লোরিডার পূর্ব-উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।

পাঁচ ধাপের সাফির-সিম্পসন উইন্ড স্কেলে ডোরিয়ানকে প্রাণসংহারী পাঁচ ক্যাটাগরির হারিকেন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী পাঁচ দিন পর্যন্ত ডোরিয়ান হারিকেন হিসেবে থেকে যাবে বলে এনএইচসি জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবাকোর বাসিন্দাদের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, একক পরিবারের জন্য নির্মিত বাড়িগুলোর অর্ধেক পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে এবং সেগুলোর ছাদের কিছু অংশ উড়ে গেছে। পুরো দ্বীপ দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ধাতুর খ- ও ছিন্ন কাঠের টুকরায় ছেয়ে গেছে।

বাহামা দ্বীপপুঞ্জের ৭০০ দ্বীপের অধিকাংশেই বিদ্যুৎ চলে গেছে ও ইন্টারনেটে প্রবেশ সীমিত হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। পূর্বাভাসে সর্বোচ্চ ৭৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। ঝড়টি ঘণ্টায় ৯ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে আর আকারে বৃদ্ধি পেয়ে কেন্দ্র থেকে ৭৫ কিলোমিটার বিস্তৃত হয়ে প্রবল শক্তি নিয়ে তা-ব চালাচ্ছে বলে এনএইচসি জানিয়েছে।

বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী হুবার্ট মিনিস রাষ্ট্রীয়ভাবে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘প্রাণঘাতী ও দানবীয় একটি ঝড়’ দ্বীপগুলোতে তা-ব চালাচ্ছে।

দ্বীপগুলোর বাড়িগুলো অন্তত ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড় মোকাবিলার মতো করে তৈরি করা, কিন্তু জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বাড়িগুলোর ছাদ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এটি আগে মোকাবিলা করিনি এমন এক পরীক্ষার মুখে আমাদের ঠেলে দিয়েছে। এটি সম্ভবত বাহামিয়ান জনগণের উদ্দেশ্যে আমার দেওয়া ভাষণের দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দুঃখের ও খারাপ দিন, বলেছেন মিনিস।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close