আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আসামে এনআরসি প্রকাশের পর তোলপাড়

হিন্দু বাঙালিরাই কি বাদ পড়ছেন বেশি?

নথি-সংকটের কারণে আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে হিন্দু বাঙালিরাই বেশি বাদ পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাঙালি হিন্দু নেতারা। সারা আসাম বাঙালি ঐক্যমঞ্চ, বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশ, বেঙ্গলি ইউনাইটেড ফোরাম তালিকা প্রকাশের আগের দিন গত শুক্রবার এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। গুয়াহাটি থেকে প্রকাশিত স্থানীয় বাংলা সংবাদমাধ্যম যুগশঙ্খ এ খবর জানিয়েছে।

চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশের দিনটিকে ঘিরে উদ্বেগে রয়েছেন খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়া রাজ্যের প্রায় ৪১ লাখ মানুষ। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় অনলাইনে এই তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে। অবশ্য সম্প্রতি ভারত সরকার আশ্বস্ত করেছে ঘোষণা করেছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়লেও এখনই কাউকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হবে না। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিলের সুযোগ পাবেন তারা।

বাঙালি নেতারা অভিযোগ করেছেন, শেষ মুহূর্তে শরণার্থীর প্রমাণপত্র, নাগরিক সনদ, রিলিফ ইনজিবিলিটি সার্টিফিকেটের মতো নথি আমলে নেওয়া হয়নি। ফলে তালিকা থেকে হিন্দু বাঙালিরাই বেশি পড়বেন।

সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব প্রমাণে ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গে লিগ্যাসি যারা ব্যবহার করেছেন তাদের আবেদন গ্রাহ্য করা হয়নি। বিশেষ করে ত্রিপুরার ভোটার তালিকার প্রতিলিপি, জমির নথিপত্র ইত্যাদি বাতিলের খাতায় ফেলা হয়েছে। অস্পষ্ট স্বাক্ষর, ক্রমিক নম্বরে গ-গোল বা ছাপা অস্পষ্ট হলেও সেগুলো খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

সারা আসাম বাঙালি যুব-ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক নেতা চিত্ত পাল বলেন, আমাদের অনুমান বলছেন চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ছে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। এদের মধ্যে ১৭ থেকে ১৮ লাখ হিন্দু বাঙালির নাম বাদ পড়বে। তার দাবি, নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নেই হিন্দু বাঙালিদের কাছে।

এনআরসি থেকে বিপুল সংখ্যক হিন্দু বাঙালিদের বাদ পড়ায় কয়েকজন বিজেপি নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে আসামের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র সরকার নতুন আইনের কথা বিবেচনা করছে। যার ফলে যারা তালিকায় স্থান পাওয়া বিদেশিদের বাদ দেওয়া যায় এবং বাদ পড়া সত্যিকার নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

গত বছরের ৩১ জুলাই এনআরসির যে দ্বিতীয় খসড়া তালিকা বের করা হয়েছিল, তাতে ৪১ লাখের কাছাকাছি মানুষের নাম বাদ পড়লেও সেখানে কোন ধর্মের মানুষ কতজন ছিলেন সেই সরকারি পরিসংখ্যান আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নানা খবর থেকে ধারণা করা হয়, ওই ৪১ লাখের মধ্যে ২৭ লাখেরও বেশি হিন্দু ও মোটামুটি ১৩ লাখের মতো মুসলিমের নাম ছিল। ‘হিন্দুত্ববাদী’ দল বিজেপির ঘোষিত অবস্থানই যেখানে বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দুদেরই শুধু নাগরিকত্ব দেওয়া। সেখানে এই তথ্য তাদের জন্য চূড়ান্ত অস্বস্তিকর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close