আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ জুলাই, ২০১৯

অ্যালিয়েন দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ অঞ্চলে হানা দেবে লাখ লাখ মানুষ!

ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের দাবি, ভিন গ্রহের প্রাণী ও মহাজাগতিক নভোযান লুকিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এবার সেটি প্রমাণ করেই ছাড়বেন, এমন পণ তাদের।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে। সে ইভেন্টে একটি মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হানা দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ‘সাইন আপ’ করেছে ১০ লাখেরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী। ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের দাবি, ওই সেনাঘাঁটিতে মহাজাগতিক প্রযুক্তি নিয়ে গোপনে গবেষণা করা হচ্ছে। ফেসবুকের ওই ইভেন্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্টর্ম এরিয়া ৫১ : দেই ক্যান্ট স্টপ অল অব আস’।

ইভেন্টের পেজে লেখা রয়েছে, ‘আমরা পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র এরিয়া ৫১ অ্যালিয়েন সেন্টারে মিলিত হবো এবং সম্মিলিতভাবে ভেতরে ঢুকব। আমরা যদি নারুটো পদ্ধতিতে দৌড়াই, তাহলে বুলেটের চেয়ে দ্রুতগতিতে দৌড়াতে পারব। চলো, অ্যালিয়েনদের দেখে আসি।’

জাপানি অ্যানিমেশন সিরিজ ‘নারুটো’র প্রধান চরিত্র নারুটো উজুমাকির দুই হাত পেছনে মেলে বিশেষভাবে দৌড়ানোর ভঙ্গিই ‘নারুটো দৌড়’ নামে পরিচিত। তবে স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হয়তো নিছক মজা করেই আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ওই ফেসবুক ইভেন্টটি খোলা হয়েছে।

বিভিন্ন মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ফেসবুকের ইভেন্টটির ব্যাপারে অবগত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী। তবে এ বিষয়ে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

এরিয়া ৫১ নিয়ে বিশদ গবেষণা করা মার্কিন অ্যারোস্পেস ইতিহাসবিদ পিটার মারলিন বলেন, ‘যুদ্ধবিমান ও সংশ্লিষ্ট অস্ত্র তৈরির বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার গোপন আস্তানা হলো এই এরিয়া ৫১।’

এই মার্কিন ইতিহাসবিদ জানান, ২০ সেপ্টেম্বর কেউ যদি বিরান মরু অঞ্চল এরিয়া ৫১-এ যায়, তাহলে তাদের জন্য বন্দুকের বুলেট ছাড়াও আরো নানা ঝুঁকি অপেক্ষা করছে।

‘ওখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের হয়তো কিছুই করতে হবে না বসে বসে দেখা ছাড়া। নিরাপত্তারক্ষীরা যদি কোনো পদক্ষেপ না নিতে চায়, তাহলেও বিপজ্জনক মরুভূমিই অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট।’

২০১৩ সালে মার্কিন গোপন বিমানঘাঁটি ‘এরিয়া ৫১’-এর কথা স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। সে সময় গোপন কিছু নথিপত্র প্রকাশ হয়ে পড়লে এ স্বীকারোক্তি জানায় দেশটি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ অতীতের বিভিন্ন রেকর্ড থেকে চারশ পৃষ্ঠার তথ্য প্রকাশ করে। এতে মার্কিন ‘ইউ-২’ গোয়েন্দা বিমানের কথাও জানা যায়।

লাস ভেগাস থেকে ৯০ মাইল উত্তরে, নেভাদা অঙ্গরাজ্যের মধ্যাঞ্চলে বিশাল এলাকা নিয়ে এই ‘এরিয়া ৫১’ তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ১৯৫০-এর দশকে বিভিন্ন ধরনের গোপনীয় গোয়েন্দা বিমানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হতো। বিশেষ করে ‘ইউ-২’ প্রকল্প পরিচালনার জন্য ওই এলাকা নির্বাচিত করে সিআইএ ও মার্কিন বিমানবাহিনী। সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধের সময় এসব ‘ইউ-২’ গোয়েন্দা বিমান ব্যবহার করত যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য এই বিমানের গোপন ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়।

‘এরিয়া ৫১’ কে কেন্দ্র করে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনিনির্ভর ব্যয়বহুল ছবি নির্মাণ করেছে হলিউড। এসব চলচ্চিত্রে দেখানো হয়, মহাজাগতিক অন্যান্য প্রাণী বিশেষ ধরনের নভোযান বা ‘ফ্লাইয়িং সসারে’ করে পৃথিবীতে আসে। যাদের অন্যতম কেন্দ্র হচ্ছে ‘এরিয়া ৫১’। ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের দাবি, মহাজাগতিক যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষা করাই ‘এরিয়া ৫১’-এর কাজ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close