আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১০ জুলাই, ২০১৯

রাষ্ট্রদূতের প্রতি পুরো সমর্থন আছে মের

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত কিম ডেরকের প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ‘পূর্ণাঙ্গ সমর্থন’ আছে বলে জানিয়েছে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিট।

ফাঁস হওয়া বেশ কিছু ই-মেইলে ডেরকের মন্তব্য ও মূল্যায়নের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আর কাজ করবেন না বলার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে তাদের অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে।

ফাঁস হওয়া ওই ই-মেইলগুলোতে ডেরক বর্তমান মার্কিন প্রশাসনকে ‘অকর্মা’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট একের পর এক টুইটে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি ব্রেক্সিট কার্যকরে থেরেসা মের ব্যর্থতারও কড়া সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ব্রেক্সিট নিয়ে মে ‘জগাখিচুড়ি পাকিয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় রাষ্ট্রদূতের ওই ইমেইল ফাঁসের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে এরপরও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ‘বিশেষ ও টেকসই’ সম্পর্ক বহাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছে। ‘ফাঁসের এ ঘটনা যে কতখানি দুর্ভাগ্যের তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পষ্ট করেছি আমরা। বাছাই করা সুনির্দিষ্ট কিছু অংশের এ ফাঁস আমাদের ঘনিষ্ঠতা ও একে অপরের প্রতি যে সম্মান, তার প্রতিফলন নয়’, বলেছেন ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্র। রাষ্ট্রদূতরা যে যে দেশে কাজ করেন, সেখানকার রাজনীতি সম্পর্কে তাদের ‘সৎ মূল্যায়ন’ পাঠানো খুবই প্রয়োজনীয় বলেও মন্তব্য করেন মুখপাত্র। ফাঁসের ঘটনার পরও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত কিম ডেরকের পাশেই আছেন, জানান তিনি। ‘পারস্পরিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থা ও লম্বা ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিশেষ ও টেকসই সম্পর্ক দাঁড়িয়েছে এবং এ ঘটনার পরও তা অব্যাহত থাকবে’, বলেছেন তিনি।

রোববার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতের একগুচ্ছ ‘গোপনীয়’ ই-মেইল প্রকাশ করে। ওই ই-মেইলগুলোতে কিম ডেরক হোয়াইট হাউসকে ‘বেখাপ্পা ও অকর্মা’ আখ্যা দিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ারও বছরখানেক আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা ডেরক বর্তমান হোয়াইট হাউসকে ‘আর কখনো যোগ্য দেখাবে কি না’ সে প্রশ্নও তোলেন। অবশ্য এত কিছুর পরও ট্রাম্পকে এখনি ‘খারিজ করে’ দেওয়ার ব্যাপারেও সতর্ক করেন তিনি।

হোয়াইট হাউসের ভেতর ‘অন্তর্ঘাত ও বিশৃঙ্খলা’ নিয়ে যেসব গুঞ্জন আছে, তার অনেকখানি সত্যি বলেও ২০১৭ সাল থেকে পাঠানো ওই ই-মেইলগুলোতে দাবি করেছিলেন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত। ইরানের মতো সংবেদনশীল ইস্যুগুলো নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের নীতিকে ‘অসংলগ্ন ও এলোমেলো’ হিসেবেও অভিহিত করেন তিনি। ডেরকের ফাঁস হওয়া ই-মেইলগুলোর প্রতিক্রিয়ায় রোববার ট্রাম্প প্রথমে বলেন, আমরা এ (ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত) লোকের অনুরক্ত নই, তিনি যুক্তরাজ্যকে ভালোভাবে সেবাও দেননি।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট ব্যর্থতাকে। ‘তিনি (মে) এবং তার প্রতিনিধিরা কী একটা জগাখিচুড়ি বানিয়ে রেখেছেন। আমি রাষ্ট্রদূতকে চিনি না, কিন্তু তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর ভালো কিছু করেছেন বলে মনে হয় না। আমরা আর তার সঙ্গে কাজ করবো না,” বলেন ট্রাম্প।

যুক্তরাজ্য শিগগিরই যে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে তাকে ‘ভালো খবর’ বলেও অ্যাখ্যা দেন এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের মন্তব্য বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানালেও সোমবার কাতারের আমিরের সম্মানে দেওয়া হোয়াইট হাউজের ডিনারে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

এদিকে রাষ্ট্রদূতের ইমেইল ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close