আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ মে, ২০১৯

লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর ফায়দা নিতে ব্যস্ত সবাই

ভোটের তাণ্ডবে দ্বিশতবর্ষে ভাঙা হলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোডশো থেকেই তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল বিদ্যাসাগর কলেজে। শুধু দরজা, জিনিসপত্র ভাঙচুর নয়, অফিসঘরে বসানো বিদ্যাসাগর-মূর্তিও বিজেপি-সমর্থকরা আছাড় মেরে ভেঙে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, শাহের রোডশোয়ে ইট ছুড়ে আক্রমণ চালিয়ে প্রথমে গোলমাল বাধিয়েছে তৃণমূলই। এমনকি রোডশো শুরুর আগেই পোস্টার-ফেস্টুন খুলে দিয়ে প্ররোচনা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছিল শাসক দল।

মহামনীষীর মূর্তি ভাঙার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকদের দিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ কমিশনার রাজেশ কুমার রাতে জানান, তদন্ত শুরু হয়ে গেছে।

রাতে মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে যান। যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পুলিশ কমিশনার। প্রশাসনের খবর, নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে মূর্তি ভাঙার খবর পান মমতা। তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে কঠোর নির্দেশ দেন, আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। বিজেপির কিছু লোক এই কা- ঘটিয়েছে। যেকোনো মূল্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ রাতে জানায়, ১৬ জন হাঙ্গামাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। আগুন জ্বালানো হয়েছে। এটা ওর ২০০ বছর। কোনো রাজনৈতিক দলের এ ধরনের হাঙ্গামা কখনো দেখিনি। বিহার-রাজস্থান থেকে গুন্ডা এনে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নিন্দার ভাষা নেই। আমি লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। বাংলার মানুষ হয়ে আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে সম্মান দিতে পারি না বিজেপির গুন্ডাদের জন্য।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, গতকাল বুধবার তার মিছিল আছে। সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিলে যোগ দিতে বলেন তিনি। মমতা বলেন, অনেকে বলছে, পুলিশের তরফে নাকি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে পুরো ঘটনায় তৃণমূলের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। কিন্তু আমি সিপির সঙ্গে কথা বলেছি। এমন কোনো বিবৃতি দেওয়াই হয়নি। পুরোটাই ভুয়ো। তার মন্তব্য, তৃণমূল এসব করে না। এত বছর ধরে মিছিল করেছি। আমাদের ছাত্ররা মিছিল করেছে। কোনো দিন এমন ঘটনা ঘটেনি। মুখ্যমন্ত্রী কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তির ভাঙা অংশগুলো কুড়িয়ে একটি বাক্সে রাখেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসেও যান তিনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বিধান সরণি দিয়ে শাহের রোডশো চলছিল। অভিযোগ, আচমকা এক দল সমর্থক পাঁচিল টপকে বিদ্যাসাগর কলেজের বিধান সরণি ক্যাম্পাসে ঢুকে হাঙ্গামা শুরু করেন। একটি মোটরসাইকেল ও একটি সাইকেলে আগুন ধরানো হয়। ওই কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতা অভিষেক মিশ্রের অভিযোগ, আমরা কিছু করিনি। ক্যাম্পাসের ভেতরে ‘মোদি গো ব্যাক’ লেখা পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওরা পাঁচিল টপকে ঢুকে ইট ছুড়তে শুরু করে। অভিষেকের কান ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। অভিযোগ, বিজেপি-সমর্থকদের হাতে নিগৃহীত হন তিনি। বিজেপির মিছিল থেকেই হাঙ্গামা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close