আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২২ মার্চ, ২০১৯

বয়স ৩১, পরীক্ষা দিয়েছেন ৭০০-এর বেশি

৩১ বছর বয়সি তথ্যপ্রযুক্তিকর্মী পুষ্পা এন এম। বাড়ি ভারতের বেঙ্গালুরুতে। আর দশজন প্রযুক্তিকর্মীর থেকে তিনি আলাদা। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরীক্ষা দিতে সাহায্য করেছেন পুষ্পা। লিখছেন তাদের হয়ে। ২০০৭ সালে পুষ্পার এক বন্ধু একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তির হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরিক্ষার্থী বলবেন আর পুষ্পা তার কথা শুনে লিখবেন। বন্ধুর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় এটি তার প্রথম কাজ।

তবে পুষ্পার জীবনও অতটা সহজ ছিল না। আর্থিক অনটনের মধ্যেই বেড়ে ওঠেছেন তিনি। স্কুলের বেতন দিতে না পারায় একবার পরীক্ষার হল থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছিল। পুষ্পা তখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ওই সময় এক প্রতিবেশী তাকে সাহায্য করেন। স্কুলের শেষ পরীক্ষার ফিও দিতে পারেননি পুষ্পা। পোলিও আক্রান্ত এক ব্যক্তি তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেন। পুষ্পা সেই সময়ই সিদ্ধান্ত নেন, কোনো মতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারলেই অসহায় ও পিছিয়ে পড়া মানুষকে সাহায্য করবেন তিনি।

শারীরিক প্রতিবন্ধীদের হয়ে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০টি পরীক্ষা দেন পুষ্পা। পলসিতে আক্রান্ত মেধাবী ছাত্র ২২ বছরের কার্তিক সেরিব্রাল। পুষ্পা স্বেচ্ছায় কার্তিকের হয়ে লেখা শুরু করেন। ১২ বছর ধরে এভাবে আরো অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন পুষ্পা। পরীক্ষার আগে পড়–য়াদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে নেন পুষ্পা। কারণ তিনি মনে করেন, তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার পরীক্ষায় দুজনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া না থাকলে সমস্যা।

পুষ্পা নিজের অফিসেও বলে রেখেছেন, পরীক্ষা এলেই তাকে ছুটি দিতে হবে। পুষ্পা বলেন, তার কাছে আর্থিকভাবে সাহায্য করার চেয়ে অসহায় মানুষদের মন ভালো করার গুরুত্ব বেশি। পরীক্ষার হলে পড়ুয়াদের ভাবতে সময় দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি। যিনি দৃষ্টিহীন তাকে প্রশ্ন পড়ে বুঝিয়ে দেন পুষ্পা। সময় যাতে নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখেন তিনি। কারণ তাদের ভবিষ্যতের অনেকটা নির্ভর করে তার ওপর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close