আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৮ মার্চ, ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে আগেই ই-মেইল করেছিল হামলাকারী

রীতিমতো ঘোষণা দিয়েই নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি করে ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। হামলার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৭৪ পৃষ্ঠার ইশতেহারও প্রকাশ করে ২৮ বছরের ওই উগ্র মুসলিম বিদ্বেষী অসি নাগরিক। এমনকি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকেও ওই ইশতেহার ই-মেইল করে সে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর প্রধান প্রেস সচিব অ্যান্ড্রো ক্যাম্পবেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হামলার কয়েক মিনিট আগে ওই ইশেতহারসহ একটি মেইল পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

অ্যান্ড্রো ক্যাম্পবেল জানান, একজন কর্মকর্তার অ্যাড্রেসে ই-মেইলটি পাঠানো হয়েছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়নি। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও দেশটির স্পিকার এবং অন্যান্য রাজনীতিকদের কাছেও ওই মুসলিম বিদ্বেষী ইশতেহারটি ই-মেইল করেছিল খুনি অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের ওই ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে এই অস্ট্রেলীয় নাগরিক। সেখানে মোটা দাগে উঠে আসে মুসলিমবিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের মতো বিষয়গুলো। মুসলমানদের উসমানীয় খিলাফতের (বর্তমান তুরস্ক) বিরুদ্ধে তৎকালীন ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেছে সে।

কথিত ইশতেহারে নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের এই নৃশংস খুনি দাবি করেছে, শ্বেতাঙ্গরা গণহত্যার শিকার এবং সে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে দিতে চায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শ্বেতাঙ্গ পরিচয়ের নতুন প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে মুসলমানদের জন্য একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরিরও আহ্বান জানিয়েছে সে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়ে ট্যারান্টের এক ধরনের আসক্তি রয়েছে। নরওয়ের আরেক বন্দুকধারী খুনি আন্ড্রেস ব্রেইভিকের সঙ্গে তার ‘গভীর যোগাযোগ’ ছিল। সে এ হামলা চালানোর জন্য তাকে উসকানি দিয়েছে। ব্রেইভিক ২০১১ সালে নরওয়েতে হামলা চালিয়ে ৭৭ জনকে হত্যা করেছিল।

কথিত ইশতেহারে হামলাকারী নিজের সম্পর্কে বলেছে, ‘আমার ভাষার উৎস ইউরোপীয়। আমার রাজনৈতিক আদর্শ ইউরোপীয়। আমার দার্শনিক অবস্থান ইউরোপীয়। আমার পরিচয়, আমি ইউরোপীয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমার রক্ত ইউরোপীয়।’ লেখক তার পরিচয় দিতে গিয়ে লিখেছে, সে একটি শ্রমজীবী শ্রেণির নিম্ন আয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠেছে। তার ভাষ্য, ‘আমি একটা সাধারণ পরিবার থেকে আসা সাধারণ এক শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, যে তার নিজ গোষ্ঠীর মানুষের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় ভূমিকা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার বাবা-মা স্কটিশ-আইরিশ-ইংলিশ বংশোদ্ভূত। আমার একটা সাধারণ শৈশব কেটেছে, যেখানে বলার মতো কোনো ঘটনা নেই।’ তার দাবি, সে একজন ‘অন্তর্মুখী’ মানুষ, একজন ‘নৃতাত্ত্বিক জাতীয়তাবাদী’ এবং ‘ফ্যাসিস্ট।’

ট্যারান্ট লিখেছে, এই হামলার পরিকল্পনা দুই বছর আগের। নিউজিল্যান্ড হামলার স্থান হিসেবে প্রথম পছন্দ ছিল না। তিন মাস আগে হামলার জন্য নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চকে বেছে নেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close