আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০১ জানুয়ারি, ২০১৯

কোরিয়া উপদ্বীপে সুবাতাস, হরমুজে উত্তাপ

কয়েক বছর ধরে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার অস্থিরতায় কোরিয়া উপদ্বীপে উত্তেজনা আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বৈরী সম্পর্ক সারাবিশ্বকে উদ্বেগে রাখলেও চলতি বছর এর অবসান হয়েছে। কোরিয়া উপদ্বীপজুড়ে বয়ে গেছে মৈত্রীর সুবাতাস। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও উত্তর কোরিয়ার বৈরী সম্পর্ক এ বছর দূর হয়েছে ঐতিহাসিক সব বৈঠকের মধ্য দিয়ে। দুই কোরিয়ার নেতার বৈঠকের পর ১২ জুনে সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের প্রথম বৈঠক ইতিবাচক ফল বয়ে এনেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দুদেশের মধ্যকার দীর্ঘ উত্তেজনার বরফ গলা শুরু হয়েছিল। পরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বৈঠকটি হয় এরই ধারাবাহিকতায়। উত্তরের শীর্ষ নেতার বৈঠকের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গোটা বিশ্বকে তাজ্জব বানিয়ে দেন ট্রাম্প। বৈঠকের পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, পিয়ংইয়ং তাদের প্রধান পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রের টানেল ধ্বংস করাসহ একটি রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস ও মার্কিন সেনাদের দেহাবশেষও ফেরত দেয়। কিন্তু উত্তরের অস্থিরতা কমলেও গনগনে উত্তাপ ছিল হরমুজ প্রণালিতে। বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সংঘাতের দামামা বাজিয়েছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা ঠকছে এ অজুহাতে মেতে ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তির সই করা পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাতেই ক্ষান্ত হননি ট্রাম্প। মিত্রদের অনুরোধ-আপত্তি অগ্রাহ্য করে তিনি তেহরানের ওপর পুরনো সব নিষেধাজ্ঞা আবার বহাল করেন। ইরানের তেল কেনা কিংবা তাদের সঙ্গে বাণিজ্যে জড়ালে সব দেশের কোম্পানিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসনের এ অবস্থান ইরানের অর্থনীতিকে খানিকটা চাপে ফেললেও রাশিয়া, চীন, ভারতের পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোও মার্কিন হুমকি-ধমকি উড়িয়ে তেহরানের কাছ থেকে তেল কেনা ও পরমাণুু চুক্তি বহালে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়। ইরানের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ডলারের বিকল্প অন্য মুদ্রা ব্যবহার করে নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর চিন্তার কথাও জানায় ইইউ।

নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেলবাহী জাহাজের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপের পরিকল্পনা জানালে পাল্টা হুঁশিয়ারি আসে ইরানের রেভ্যুলেশনারি গার্ডের কাছ থেকেও। ইরান তেল বেচতে না পারলে অন্য সব দেশের জন্যও হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। বছরজুড়েই এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বাদানুবাদের খবর গুরুত্ব পায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সঙ্গেও কথার লড়াই চলে তেহরানের। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব দিনদিন আরো শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি খবর মেলে তাদের অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বিস্তারেরও।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close