আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৮ নভেম্বর, ২০১৮

মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া সিরীয় শরণার্থীর কানাডায় আশ্রয়

প্রায় সাত মাস মালয়েশিয়ার একটি বিমানবন্দরে দিনযাপন করার পর কানাডায় আশ্রয় পেয়েছেন এক সিরীয় শরণার্থী। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করা শুরু করলে হাসান আল-কন্তারের ঘটনাটি বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে।

৩৭ বছর বয়সী হাসান আল-কন্তার শেষ দুই মাস ছিলেন মালয়েশিয়ার একটি বন্দিশালায়। তার কানাডিয়ান পৃষ্ঠপোষকরা সে সময় তার মামলার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানায়। সোমবার সন্ধ্যায় কানাডার ভেঙ্কুভারে অবতরণ করেন তিনি।

কানাডায় শরণার্থী হিসেবে তাকে আনার পেছনে পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকা পালন করেছে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন এবং কানাডা কেয়ারিং সোসাইটি নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। কানাডা কেয়ারিং সোসাইটির একজন স্বেচ্ছাসেবক লরি কুপার বিবিসিকে বলেন, কন্তারের অবস্থা থেকে বোঝা যায় সারা বিশ্বে শরণার্থীরা প্রতিনিয়ত কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন।

নিরাপদ একটি আবাস খুঁজে পাওয়া শরণার্থীদের জন্য দিনদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কন্তার ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন। কানাডা কেয়ারিং সোসাইটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কন্তারকে কানাডা নিয়ে আসার জন্য তহবিল সংগ্রহে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহায্য করেছে মানুষ।

কন্তারের মামলাটিকে আলোচনায় এনেছিল বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা। কন্তারকে যেন কানাডা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় সে জন্য কানাডার অভিবাসনবিষয়কমন্ত্রী বরাবর অনলাইনে একটি গণআবেদন দাখিল করে কানাডিয়ান কেয়ারিং সোসাইটি। ওই গণআবেদনে ৬২ হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছিল।

২০১১ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পরার সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত ছিলেন কন্তার। সিরিয়ায় থাকতে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক সেবাদান সম্পূর্ণ করেননি বলে পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেননি কন্তার। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশে ফিরে গেলে জোরপূর্বক যুদ্ধে পাঠানো হবে এই আশঙ্কায় সিরিয়া ফিরে যাননি তিনি।

আরব আমিরাতেই অবৈধভাবে বসবাস করতে থাকেন তিনি। ২০১৬ সালে আরব আমিরাতে গ্রেফতার হন কন্তার।

২০১৭ সালে নতুন পাসপোর্ট পেতে সক্ষম হলেও তাকে মালয়েশিয়া পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মালয়েশিয়া পৃথিবীর কয়েকটি দেশের একটি যেখানে সিরিয়ানদের ভিসা ছাড়াই প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। মালয়েশিয়া পৌঁছানোর পর তিন মাসের ট্যুরিস্ট ভিসা পান কন্তার।

ওই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তুরস্কে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সে সময় তাকে বিমানে উঠতেই দেওয়া হয়নি।

এরপর কন্তার কম্বোডিয়া গেলেও সেখান থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে মাসের পর মাস অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করেন কন্তার। বিমানবন্দরে নিয়মিত আসা-যাওয়া করা বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের কর্মীদের দান করা খাবার খেয়ে দিন পার করতেন তিনি।

দামেস্কের দক্ষিণাঞ্চলের সুয়েদা এলাকার হাসান আল-কন্তার ইকুয়েডর এবং কম্বোডিয়াতেও আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন তিনি। অবশেষে কানাডায় আশ্রয় হলো তার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close