আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১০ অক্টোবর, ২০১৮

জার্মানিতে রাজ্য নির্বাচনের আগে মের্কেলের নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে

গতমাসে জার্মান সংসদে নিজের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর ফল্কার কাউডারকে হারিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মার্কেল। শনিবার তাঁর সিডিইউ দলের তরুণ কর্মীদের সংগঠন ‘ইয়ুঙ্গে উনিয়ন’ বা জেইউ-র সম্মেলনেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাঁকে।

তারপরও ডিসেম্বরে দলের সম্মেলনেম্যার্কেলের নেতৃত্ব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে – এই কথা বিশ্বাস করার মতো রাজনৈতিক বিশ্লেষকের সংখ্যা কমই হবে। জেইউ-র সম্মেলনেও সেই ধারণা পরিষ্কার হয়েছে। বক্তারা ম্যার্কেলের সমালোচনা করলেও দলের জন্য এখনো যে নতুন নেতৃত্বের সময় আসেনি, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন।

জেইউ নেতা পাউল সিমিয়াক ম্যার্কেলের প্রতি দলকে আধুনিক করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এই আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সম্মেলনে উপস্থিত কর্মীরা। জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যে ম্যার্কেলের ‘খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল’ সিডিইউর সহযোগী দল হচ্ছে সিএসইউ। আগামী রবিবার ঐ রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সবশেষ জরিপে দেখা গেছে, সিএসইউ-র জনপ্রিয়তা এবার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সিএসইউ দল একাই বাভারিয়ার সরকার পরিচালনা করেছে। কারণ, দলটি প্রায় ৫০ শতাংশের মতো ভোট পেতো। কিন্তু সবশেষ জরিপ বলছে, সিএসইউ এবার ৩৩ শতাংশ ভোট পেতে পারে। রবিবারের নির্বাচনে যদি জরিপের ফলাফলের প্রতিফলন ঘটে, তাহলে এবার জোট সরকারের দিকে যেতে হতে পারে।

বাভারিয়া রাজ্যে সিএসইউ দলের এই খারাপ পরিস্থিতির জন্য দলের অনেক কর্মী ম্যার্কেলকেই দায়ী করেন। তাই জেইউ-র সম্মেলনে ম্যার্কেল যখন বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠছিলেন তখন সিডিইউ-র তরুণ কর্মীরা দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানালেও সিএসইউ’র কর্মীরা বসেই থাকেন। শুধু তাই নয়, ম্যার্কেলের আধ ঘণ্টার বক্তব্যের সময় সিএসইউ’র কর্মীদের কেউ মোবাইলে চোখ রেখেছেন, আর কেউ সংবাদপত্র পড়েছেন।

এমনকি মাটিয়াস ব্যুটগ্যার নামে সিএসইউ দলের এক কর্মী উঠে দাঁড়িয়ে ম্যার্কেলকে বলেন যে, তাঁর (ম্যার্কেল) নেতৃত্বে দল এগিয়ে যাবে বলে তিনি আর মনে করছেন না।

সম্মেলন শেষে ব্যুটগ্যার ডয়চে ভেলেকে বলেন, সবশেষ সংসদ নির্বাচনে সিডিইউ-সিএসইউ জোটের খারাপ ফলাফলের পর গত এক বছর ধরে দলের অনেকেই বিষয়টি (ম্যার্কেলের নেতৃত্ব) নিয়ে খোলাখুলি মন্তব্য করছেন।

সিএসইউ-র আরেক কর্মী টোমাস হাসলিঙ্গার ডয়চে ভেলেকে বলেন,ম্যার্কেলের প্রতি হতাশার কারণ তাঁর নেয়া শরণার্থী নীতি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর নীতির কারণেই অস্ট্রিয়া থেকে অনেক শরণার্থী বাভারিয়ায় প্রবেশ করেছিল। ‘‘তাঁর সিদ্ধান্ত ঠিক, না ভুল ছিল, সে মূল্যায়ন আমি করব না। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, ঐ নীতির কারণে মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে,’ বলেন তিনি। শরণার্থীবিরোধী দল ‘জার্মানির প্রতি বিকল্প’ বা এএফডি দলের আজকের উত্থানের জন্যও ম্যার্কেলকে দায়ী করেন হাসলিঙ্গার।

সিএসইউ’র মতো সিডিইউ’র তরুণ কর্মীরাও ম্যার্কেলের সমালোচনা করেছেন। তবে তারপরও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় এখন নয় বলেও মনে করেন তাঁরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close