আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৯ আগস্ট, ২০১৮

মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা ট্রাম্পের

২৪ বছর আগে করা উত্তর আমেরিকান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নাফটা সংস্কারের জন্য মেক্সিকোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের পর এবার চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছে দেশ দুটি। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন দাবি করে ঘোষণা দেন। তবে নাফটা চুক্তির তৃতীয় দেশ কানাডা এই আলোচনায় আবারও অংশ নেবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার সেই বিষয়ে আলোচনা হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প এক বছরের বেশি সময় ধরে নাফটা চুক্তির সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। তার অভিযোগ, চুক্তিটির ফলে মার্কিন শ্রমিক ও উৎপাদনকারীদের চেয়ে মেক্সিকো বেশি লাভবান হচ্ছে। ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায়ও বিষয়টিকে প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলোর একটি হিসেবে রেখেছিলেন। চুক্তিটি সংস্কার না করা হলে তা থেকে বের হয়ে আসার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশন ভাষণে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এর ফলে একটি ‘অবিশ্বাস্য’ চুক্তি হবে, যা অনেক বেশি ন্যায্য হবে।

এক বছর ধরে নাফটা চুক্তির সংস্কার নিয়ে আলোচনা চললেও গত ৫ সপ্তাহের আলোচনায় অংশ নেয়নি কানাডা। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দেখব এই চুক্তিতে কানাডাকে রাখা যায় কিনা। নইলে কানাডার সঙ্গে আলাদা চুক্তি করা হবে।’ তিনি কানাডার গাড়ির ওপর কর আরোপের হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি নাফটা নামটি থেকেই মুক্তি চান। তার মতে, চুক্তিটির ধারণাগুলোই খারাপ।

মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনায় সাফল্যের কথা ঘোষণার পর ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তার দফতর থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ও ট্রুডোর মধ্যে ‘গঠনমূলক কথাবার্তা’ হয়েছে। তারা এই আলোচনার সফল সমাপ্তির জন্য নিজেদের দলকে এই সপ্তাহেই যুক্ত করতে যাচ্ছেন। কানাডার পক্ষ থেকে সমঝোতাকারীরা মঙ্গলবার মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ট্রুডো রোববার মেক্সিকোর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট এনরিকে পিনা নিয়েতোর সঙ্গেও কথা বলেছেন। ওই সময় দুই নেতা নাফটার একটি সফল সমাপ্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

নাফটার আওতায় বছরে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়। সংস্কারের পর অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এতে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি, ডিজিটাল ট্রেড ও বিনিয়োগ নীতিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন খসড়া চুক্তির বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, করমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য দুই দেশকে অবশ্যই ৭৫ শতাংশ পণ্য নিজ দেশে উৎপাদন করতে হবে। বিদ্যমান চুক্তিতে থাকা হারের চেয়ে এটা বেশি। এ ছাড়া ৪০-৪৫ শতাংশ মোটরযান এমন শ্রমিকদের মাধ্যমে করতে হবে যাদের ন্যূনতম বেতন ঘণ্টায় ১৬ ডলার।

সস্তা শ্রমের আশায় কোম্পানিগুলোর মেক্সিকোতে কারখানা স্থাপনের প্রবণতা বন্ধের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো তাতে রাজি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই চুক্তি আগামী ১৬ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। আর প্রতি ছয় বছর পর পর চুক্তিটি পর্যালোচনা করা হবে। তবে এসব পর্যালোচনার কারণে চুক্তির মেয়াদের কোনো পরিবর্তন হবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close