আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত
যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিচুক্তি ‘অনর্থক’
যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তিকে অনর্থক বললেন জাতিসংঘের নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত। এই চুক্তিতে জেরুজালেম বা শরণার্থীদের বিষয়ে কিছু না বলায় এটা কোনো কাজেই আসবে না বলে মন্তব্য তার। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর বলেন, তারা যে প্রস্তাব করতে যাচ্ছে আমরা তাতে আগ্রহী নই। আলোচনায় জেরুজালেম ও শরণার্থীদের বিষয়গুলো বাইরে রাখা হয়েছে।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দেন। বিশ্বজুড়ে নিন্দা আর তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেও দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই ১৪ মে জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসনকে বর্জনের ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তারপরও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রস্তাবের বিষয়বস্তু জানার পর তা মানতে রাজি হচ্ছে না ফিলিস্তিনি নেতারা। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত এই মন্তব্য করলেন।
মানসুর আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাদ্দ কমানোয় ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ ত্রাণ ও উদ্ধার এজেন্সি ধ্বংস হতে চলেছে, ইহুদি বসতি কমবেশি গ্রহণযোগ্য আর দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই আচরণ করা হয়, তাহলে আর আলোচনার কী বাকি থাকে? মানসুর বলেন, এই কারণে আমরা এমন অনর্থক কিছুর সঙ্গে জড়াতে চাই না। কারণ তারা একতরফাভাবে যে প্রস্তাব ঘোষণা করেছে তা শান্তি ও উন্নতির পথ নয়। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দখলদারিত্ব থেকে নিজেদের মাতৃভূমির দখল ঠেকাতে বিক্ষোভে নামলে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ওই ঘটনার স্মরণে এই বছর ৩০ মার্চ থেকে প্রতি শুক্রবার অধিকৃত গাজা সীমান্তে ভূমি দিবস পালনে ফিলিস্তিনিরা ‘গ্রেট রিটার্ন অব মার্চ’ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। আর প্রতি সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান কর্মসূচিতে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েল। মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা অন্তত ১৪০ জন। গত ১২ বছর ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে গাজা উপত্যকা। সেখানে বসবাসরত প্রায় ২০ লাখ মানুষকে বিদেশি ত্রাণের ওপর নির্ভর করতে হয়।
"