আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২২ জুলাই, ২০১৮

‘ইহুদি জাতিরাষ্ট্র’ ঘোষণার নেপথ্যে

দখলদার ইসরায়েলের সংসদ ‘নেসেট’ গত বৃহস্পতিবার গোটা অধিকৃত ফিলিস্তিনকে ইহুদি জাতিরাষ্ট্র বলে ঘোষণা দিয়ে এ ঘোষণাকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেছে। চরম বর্ণবাদী বা ইহুদিবাদী এ আইন অনুযায়ী গোটা ফিলিস্তিন কেবল ইহুদিবাদীদের দেশ হওয়ায় সেখানে ফিলিস্তিনিদের কোনো নাগরিক ও মানবিক অধিকার থাকবে না। এছাড়াও হিব্রু ভাষাই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।

ইসরায়েলি এ আইনে মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর বায়তুল মুকাদ্দাসকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদীদের জন্য নতুন নতুন অবৈধ বসতি গড়ে তোলাকে জাতীয় মূল্যবোধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ আইনে পুরনো অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর বিস্তার ও উন্নয়নের পাশাপাশি কথিত নতুন ‘ইহুদি-বসতি’ গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের এই নতুন বর্ণবাদী তা-ব ও উপনিবেশবাদী দাম্ভিকতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী বলে সংস্থাগুলো উল্লেখ করেছে। এমনকি হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিকও এই বিল পাসের প্রতিবাদে তেল-আবিবে বিক্ষোভ-মিছিল করেছে। আমেরিকার কয়েকটি ইহুদি সংস্থাও ইসরায়েলের কথিত এ আইনকে বর্ণবাদী বলে অভিহিত করে ইসরায়েলি সংসদে এ আইন অনুমোদন না করার দাবি জানিয়েছিল। মার্কিন ট্রাম্প সরকারের জোরদার সহায়তা ও সবুজ সংকেত পেয়েই ইসরায়েল সাম্প্রতিক সময়ে আরো বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প সরকার বিশ্ব জনমতের নিন্দা ও বিশ্ব সমাজের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসকে তেলআবিব থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে স্থানান্তর করায় ইসরায়েলি নেতারা নতুন উদ্যমে অপরাধযজ্ঞ ও আগ্রাসন জোরদারে উৎসাহী হয়ে উঠেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরায়েল কথিত এ আইনের অজুহাত দেখিয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত নির্মূল অভিযান জোরদার ও তাদের স্বদেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া, ইহুদিবাদীদের জন্য অবৈধ উপশহর নির্মাণ অব্যাহত রাখা এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ফেরত আসার পথ বন্ধ করার পদক্ষেপগুলো তীব্রতর করবে।

ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা বা পিএলও’র মহাসচিব সায়েব ইরিকাত বর্ণবাদী ইসরায়েলের এ নতুন আইনকে জাতিগত শুদ্ধি অভিযানভিত্তিক উপনিবেশবাদের ধারা অব্যাহত রাখা বলে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক এই ভূখ-ের তথা ফিলিস্তিনের প্রকৃত অধিবাসীদের অধিকারকে পরিকল্পিতভাবে উপেক্ষা করা হলো। ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দল হামাসের মুখপাত্র ফৌজি বারহুম ইসরায়েলের এ নতুন হঠকারিতার জন্য আঞ্চলিক দেশগুলোর নীরবতা ও মার্কিন সরকারের লাগামহীন সহায়তাকে দায়ী করেছেন। ইসরায়েলি সংসদের আরব সদস্য আহমাদ তাইয়্যেবিও মানবাধিকার বিরোধী ও চরম বর্ণবাদী ইসরায়েলি এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি সংসদে এ আইন পাস হওয়ার ঘটনা ফিলিস্তিনে গণতন্ত্রের মৃত্যুর সমতুল্য।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist