আন্তর্জাতিক ডেস্ক
হোয়াটসঅ্যাপ ভাইরাল মেসেজে ধরা পড়ল ধর্ষণকারী
ভারতের মধ্য প্রদেশে হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া মেসেজের সূত্র ধরে এক ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশু। গত ২৬ জুন বিদ্যালয় থেকে সে আর বাড়ি ফেরেনি বলে পুলিশকে জানায় শিশুটির বাবা-মা। নিখোঁজের পরদিন অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে কাছের একটি বাস স্টেশনের নিরিবিলি এক কোণে পড়ে থাকতে দেখেন একজন সবজি বিক্রেতা। ডাক্তারে কাছে নিলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন যে, সে ধর্ষণের শিকার এবং তার শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্নও রয়েছে। এ খবর জানাজানি হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাস্তায় নেমে আসে শত শত প্রতিবাদী মানুষ। অপরাধীর বিচার চেয়ে তারা সকলে সেøাগান দিতে থাকে। ফলে বেশ একটা চাপ তৈরি হয় পুলিশের ওপর।
কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কোনো সূত্র পাচ্ছিল না। কারণ ঘটনার দিন মেয়েটির বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরা ছিল নষ্ট। তাই ক্লাস শেষে বিদ্যালয় থেকে মেয়েটি কার সঙ্গে গিয়েছিল সেটি খতিয়ে দেখার কোনো উপায় ছিল না।
কিন্তু মানুষের মিছিল, সেøাগান ও সামাজিক চাপের কারণে পুলিশ অনেকটা বেকায়দায় পড়েই বিদ্যালয়ের আশপাশের দোকানগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শুরু করে।
এভাবে মোট ৪০০ ঘণ্টা ফুটেজ দেখতে গিয়ে তিনটি ভিডিওতে আটকে যায় পুলিশের চোখ।
একটি ভিডিওতে তারা দেখতে পায় যে মেয়েটি একজন লোকের সঙ্গে যাচ্ছে। কারণ সে মেয়েটিকে মিষ্টিজাতীয় কিছু খেতে সেধেছে।
তবে, বিপত্তিটা ছিল এই যে, সেই লোকটির চেহারাটা ওই ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে গেলে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কিন্তু পুলিশ হাল ছাড়েনি। তারা দেখলো যে সেই ব্যক্তির জুতোর ব্র্যান্ডটি স্পষ্ট করে পড়া যাচ্ছে। তাই জুতোর সেই ব্র্যান্ড ধরেই অপরাধীকে পাকড়াও করার মিশনে নামে পুলিশ।
ধর্ষককে পাকড়াও করার অংশ হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপে মেয়েটির ছবি ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয়, সে নিহত হয়েছে। এই বার্তাটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে মধ্য প্রদেশের ছোটো সেই শহরের বেশির ভাগ মানুষ। এভাবেই এই কমিউনিটির লোকজন ও পুলিশ একসঙ্গে পরস্পরকে সহায়তার ভিত্তিতে কাজ করতে শুরু করে।
তারপর অপরাধীর জুতোর ব্র্যান্ডের ওপরে ভিত্তি করে চালানো সেই অনুসন্ধান থেকেই পুলিশ একটা স্পষ্ট ধারণা পায় এবং মাত্র সাতজন সন্দেহভাজনকে তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় নিয়ে আসে। তবে এরই মধ্যে ভারতে কিছু গণপিটুনির ঘটনাও ঘটে যায়। কারণ একদিকে হোয়াটসঅ্যাপের সেই ভাইরাল মেসেজ, অন্যদিকে অপরিচিত লোকজনদের প্রতি মানুষের অনাস্থা ও সন্দেহ।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সাতজন সন্দেহভাজনের মাঝখান থেকে আসল অপরাধীকে খুঁজে বের করে পুলিশ। আর এভাবেই হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া মেসেজের সূত্রেই ধরা পড়ে ধর্ষণকারী।
"