আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২১ জুন, ২০১৮

শরণার্থী সংকট

ইইউ সমাধানের সন্ধানে ম্যার্কেল-ম্যাক্রোঁ

ইউরোপে শরণার্থী সংকট সামাল দিতে সামগ্রিক সমাধান সূত্র তুলে ধরেছেন ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতারা। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রস্তাবও তাতে স্থান পেয়েছে। এভাবে জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তার সরকারের রাজনৈতিক সংকটও মেটাতে চান।

শরণার্থী নীতিকে কেন্দ্র করে দেশের মধ্যে কোণঠাসা ম্যার্কেল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সমর্থন পেয়ে কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার বার্লিনের উপকণ্ঠে শীর্ষ বৈঠকের পর ম্যাক্রোঁ বলেন, শরণার্থীরা ইউরোপের যে দেশে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের সেখানে ফেরত পাঠাতে হবে। এই লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় সমাধান সূত্র খুঁজে বের করতে হবে। ম্যাক্রোঁ এক্ষেত্রে ম্যার্কেলের সঙ্গে কাজ করতে চান। অর্থাৎ শরণার্থী নীতির প্রশ্নে ম্যার্কেল একতরফা পদক্ষেপের বদলে ইউরোপীয় স্তরে সমাধান সূত্রের যে উদ্যোগ নিচ্ছেন সেই অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানালেন ম্যাক্রোঁ।

ম্যার্কেল বলেন, ম্যাক্রোঁ ও তিনি ইউরোপে আরো বিভাজন চান না। তাদের মতে, ইউরোপীয় সংকটের মুখে বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপের বদলে সাধারণ সমাধান সূত্র প্রয়োজন। তা না হলে শেঙেন চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং তার ফলে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে উন্মুক্ত সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাবে। তবে ম্যাক্রোঁ ও ম্যার্কেল ইউরোপীয় চুক্তি অমান্য করে দায়িত্ব এড়িয়ে শরণার্থীদের অন্য দেশে ঠেলে দেওয়ার প্রথার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর। অর্থাৎ এক দেশে শরণার্থীরা নথিভুক্ত হওয়ার পর তাদের সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে চলে যেতে দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাভেরিয়ার সিএসইউ দল ইউরোপীয় বা দ্বিপক্ষীয় সমাধান সূত্রের জন্য অপেক্ষা না করে অবিলম্বে একক পদক্ষেপ নিতে চায়। আপাতত তারা ম্যার্কেলকে দুই সপ্তাহ সময় দিতে রাজি হয়েছে। এই সময়কালে ম্যার্কেল বিকল্প সমাধান সূত্র না পেলে জুলাই মাসে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।

ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক ইউরোপের বাইরে শরণার্থী শিবির গড়ে তোলার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, ম্যার্কেল সে বিষয়ে আলোচনা করতেও প্রস্তুত। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংগঠন আইওএম-এর সঙ্গে যৌথভাবে এমন শিবির পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছেন টুস্ক। তার মতে, এমন কেন্দ্রে প্রকৃত শরণার্থী ও অর্থনৈতিক শরণার্থীদের দ্রুত আলাদা করা সম্ভব হবে। বিপজ্জনক পথে ইউরোপে অনুপ্রবেশের বদলে আইনি পথে শরণার্থীদের এমন কেন্দ্রে যেতে উৎসাহ দেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত কোনো দেশের নাম প্রস্তাব না করা হলেও লিবিয়া ও আলবেনিয়ায় এমন কেন্দ্র গড়ে তোলার সম্ভাবনা আলোচিত হচ্ছে। আগামী ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রস্তাবের খসড়া পেশ করা হবে। বেআইনি অনুপ্রবেশ রুখতে ম্যার্কেল সেই সঙ্গে আইনি পথে শরণার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ বা উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থার পক্ষেও সওয়াল করেছেন।

ম্যাক্রোঁ ও ম্যার্কেল এই প্রসঙ্গে ইউরোপজুড়ে শরণার্থী গ্রহণের একক মানদ-ের ওপর জোর দিয়েছেন। এই লক্ষ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এক ইউরোপীয় এজেন্সি বিভিন্ন দেশের আইনের মধ্যে সমন্বয় করবে।

যেসব দেশে শরণার্থীদের আগমন ঘটে, তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছেন দুই নেতা। তাদের প্রস্তাবিত সার্বিক সমাধান সূত্রের আওতায় ইউরোপের বহির্সীমানা সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্সকে আরো শক্তিশালী করে তোলা হবে। তাছাড়া যেসব দেশ থেকে শরণার্থীরা আসছেন, সেসব দেশের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা চালানো হবে।

বলা বাহুল্য, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এত বড় আকারের পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। তবে শরণার্থী সংকটের সমাধান করতে আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনেই এসব প্রক্রিয়া শুরু করতে চান ম্যার্কেল ও ম্যাক্রোঁ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist