আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কেল-পুতিন বৈঠক
সিরিয়া, গ্যাস পাইপলাইন ও ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে দুই নেতা সিরিয়া, দ্বিতীয় গ্যাস পাইপলাইন ও ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা বিষয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্য দিয়েই বৈঠক করলেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।
গত শুক্রবার রাশিয়ার সোচি শহরে হওয়া এই বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে মার্কেল বলেন, ইরানে পরমাণু চুক্তির চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। এছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে অস্ত্রবিরতি ভঙ্গের ঘটনারও সমালোচনা করেন তিনি।
ইউক্রেন ইস্যু : দুই নেতাই পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ‘একমাত্র ভিত’ হিসেবে মিনস্ক চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। তারা উভয়েই মনে করেন, এতে জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এর বাস্তবায়ন সম্ভব।
সেখানে অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের সমালোচনা করেন মার্কেল। পুতিন ইউক্রেনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবস্থানের সমর্থন করছেন।
হ্যাকিং হামলা : জার্মানিতে সাইবার হামলার নেপথ্যে কিছু রুশ রাষ্ট্রীয় সংস্থা রয়েছে বলে জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা মনে করে। ২০১৫ সালে জার্মানির সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও ফাউন্ডেশনের ওপর এমন হামলা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জার্মানির সরকারি নেটওয়ার্কের ওপর সাইবার হামলার ক্ষেত্রেও রাশিয়া জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। সেই হামলায় অনেক তথ্য চুরি হয়েছিল। নর্ড স্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইন করা হলেও ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে প্রথম গ্যাস পাইপলাইনটিও সচল রাখার পক্ষে জোরাল সমর্থন দেন ম্যার্কেল। বলেন, ‘এক্ষেত্রে জার্মানি তার দায়িত্ব পালন করবে।’
পুতিনও আশ্বস্ত করে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। ‘অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হলে অবশ্যই গ্যাস সরবরাহ করব আমরা,’ বলেন তিনি।
পুতিন অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেননি, বরং তিনি বলেন, ‘আমি বুঝি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দেশের ব্যবসায়িক স্বার্থকেই আগে দেখছেন। ইউরোপের বাজারে তিনি তার দেশের পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে চান।’
পুতিন বলেন, ‘ডোনাল্ড শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টই নন, তিনি নিজেও একজন ভালো উদ্যোক্তা।’
মধ্যপ্রাচ্য : মার্কেল বলেন, ইরান চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
‘এটা হয়তো সবদিক থেকে যথাযথ চুক্তি নয়, কিন্তু এর চেয়ে ভালো কোনো চুক্তি হয়নি’, বলেন তিনি।
পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে সিরিয়া পুনর্নির্মাণে সহযোগিতা করা উচিত, যদিও তারা চায় যে, সে দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা ফিরে যাক।
আর কী বলা হয়েছে : পুতিন বলেন, আলোচনা খুবই ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে।
মার্কেল বলেন, ‘ভিন্নমত থাকলেও বড় সমস্যাগুলো কার্যকরী আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়।’
দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যুতে মতভেদের মাঝখানে ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে জার্মানি ও রাশিয়ার একই দৃষ্টিভঙ্গিকে বিরল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে রাশিয়ার সমর্থন, তাদের ক্রাইমিয়া দখল এবং পূর্ব ইউক্রেনে আগ্রাসনসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে রাশিয়ার কড়া সমালোচনা করেছে জার্মানি।
"