আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কেমন হলো সৌদি যুবরাজের হলিউড সফর
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রীতিমতো রাজকীয় অভ্যর্থনাই জানানো হলো হলিউডে। লস এঞ্জেলসের পুরো সফরেই নানা ধরনের প্রতিবাদ দেখতে হয়েছে তাকে। বিশেষ করে ইয়েমেন আর নারী স্বাধীনতার ইস্যুতে। তার উদ্যোগেই প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর পর সৌদি আরবে উন্মুক্ত হচ্ছে পশ্চিমা সিনেমা। ব্ল্যাক প্যানথার মুভির মাধ্যমে শিগগিরই পশ্চিমা সিনেমার যাত্রা শুরু হচ্ছে সৌদি আরবের সিনেমা হলে।
মোহাম্মদ বিন সালমান, যিনি পশ্চিমা বিশ্বে এমবিএস নামে পরিচিত, রাতের খাবার খেয়েছেন মিডিয়া মুগল রূপার্ট মারডকের বাড়িতে। সেখানে স্টুডিও প্রধানরা ছাড়াও ছিলেন দ্য রক খ্যাত অভিনেতা ডুয়াইন ডগলাস জনসন। ডিনারের পর ফেসবুক পোস্টে দ্য রক লিখেন সৌদি আরবে তার অসংখ্য তরুণ ভক্ত আছে জেনে তিনি আনন্দিত। ‘আমি আমার প্রথম সৌদি আরব সফরের দিকে তাকিয়ে আছি। আমি নিশ্চিত সেখানকার চমৎকার টেকিলা (এক ধরনের অ্যালকোহল) রয়্যাল হাইনেস ও পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করব।’ কিন্তু টেকিলা ও দ্যা রক সৌদি আরবে? অ্যালকোহল সৌদি আরবে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে।
সৌদি যুবরাজের সফরসঙ্গীরা এবার পুরো হোটেলটিই নিয়ে নিয়েছিল যেখানে সংগীত থেকে খাবার তালিকা সবকিছুতেই ছিল সৌদি আমেজ। একটা সম্মেলনও হয়েছে যেখানে মূলত আলোচনা হয়েছে সৌদি আরবে বিনোদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেখানে হলিউডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বহু ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। একদল অধিকার কর্মী অবশ্য ইয়েমেন ও নারী ইস্যুতে সৌদি অবস্থানের প্রতিবাদ করেছে সেখানে। তবে এটিও ঠিক হলিউড এবার প্রত্যক্ষ করেছে ৩২ বছর বয়সী যুবরাজের নির্দেশনায় পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত একটি সৌদি আরবকে। ফলস্বরূপ সৌদিরা এখন আশা করতেই পারেন যে হলিউডের সুপার ডুপার সিনেমাগুলো শিগগিরই তারা দেখতে পারবেন সেখানে। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সিনেমা চেইন এএমসি সৌদি আরবে ৩০টির মতো সিনেমা হল খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। সৌদি আরবের বিনোদন কর্তৃপক্ষ তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেছে সেখানে তাদের মূল বিষয় ছিল পরিবর্তন। তারা বলছেন, ৭০ ভাগ সৌদি নাগরিকের বয়স ত্রিশের কোঠায় এবং তারা বিনোদনের জন্য ক্ষুধার্ত।
বুশ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ : জর্জ এইচ বুশ ও জর্জ ডব্লিউ বুশ, দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বিশ্ব রাজনীতির তুমুল আলোচিত বুশ পরিবারের সঙ্গে এবার দেখা করলেন যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (৩২)। বুশ পরিবারের টেক্সাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন সৌদি যুবরাজ। এ সময় তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যান নিজের ভাই ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন সালমানকে। সাক্ষাৎপর্বের পর সিনিয়র বুশ এক টুইটবার্তায় বলেন, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব উদ্যাপন করার সুযোগ পেয়ে তিনি অভিভূত ও আনন্দিত।
সিনিয়র বুশ ছিলেন দেশটির ৪১তম প্রেসিডেন্ট। তার আমলে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন কুয়েতে হস্তক্ষেপ করেন। সৌদি আরবেও হামলার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
এরপর ইরাকের বিরুদ্ধে বুশ অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম শুরু করেন। এতে প্রায় ৫০ হাজার ইরাকি নিহত হয়েছিলেন। মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সিনিয়র বুশের সাক্ষাতের সময় তার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩তম প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিম বাকের উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডব্লিউ বুশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলে আফগানিস্তান ও ইরাকে হামলা করেন। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
"