আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে নারী পরিচালিত রেলস্টেশন কর্মীরা যৌন হয়রানির শিকার
ভারতের একমাত্র আন্তঃরাজ্য ট্রেন স্টেশনের টিকিট চেকার মহিমা দত্ত শর্মা বুথের ভেতর তার দিকে কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে থাকা লোকদের চোখ রাঙ্গানী দেন। তাকে নিত্যদিনই এমন নানা সমস্যার মধ্যদিয়ে কাজ করতে হয়। মহিমা জয়পুরের গান্ধীনগর জংশনে কাজ করেন।
তিনি বলেন, ‘বোর্ডে সব ধরনের তথ্য থাকা সত্ত্বেও তারা বারবার আমার কাছে আসে। তারা এমন সব প্রশ্ন জানতে চায়, যা জানার জন্য আমার কাছে না এলেও চলে।’ খবর এএফপির।
মহিমা বলেন, ‘তারা নারীর এ ধরনের কাজ করতে দেখে অভ্যস্ত নন, তাই এমন করেন। এ জন্য আমি তাদের খুব একটা দোষ দিই না।’ নারীদের এই অগ্রযাত্রা শুধু রাজস্থানে রক্ষণশীলতাই নয়, বরং গোটা ভারতের নারীদের চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ থাকার সামাজিক ঐতিহ্যকে ভেঙে দিচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে, বিশ্বের অন্যতম প্রধান দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা খুবই কম। গ্রামাঞ্চলে যেখানে অধিকাংশ মানুষ বাস করে, সেখানে নারীদের উপার্জনশীল কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার হার অনেক কম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনকারী নারীদের দুই-তৃতীয়াংশই কাজ করে না।
ভারতের প্রধান নগরীগুলোতে আরবান সাবওয়ে নেটওয়ার্ক নারীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে তাদের জন্য ট্রেনে নির্দিষ্ট কামরা বরাদ্দ দিলেও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপের তুলনায় ক্ষমতায়নের বিষয়টি খুবই অপ্রতুল। গান্ধীনগর জংশনে দিনে প্রায় সাত হাজার যাত্রী যাওয়া-আসা করে। এদের মধ্যে প্রত্যন্ত উপজাতীয় ও মরু অঞ্চলের লোকজনও রয়েছে। যাত্রীদের অধিকাংশই নারীদের এই ধরনের কাজ করতে দেখে অভ্যস্ত নয়।
স্টেশন সুপারভাইজার নিলম জাতভ বলেন, এই চাকরি তাকে ‘নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা দিয়েছে।’ কিন্তু একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে পুরুষদের সন্দেহ ও ঈর্ষার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে চাকরি শুরুর পর থেকেই খেয়াল করছি পুরুষরা আমার দিকে কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকে।’ সাহসী এই নারী আরো বলেন, ‘এটা আমার জন্য খুবই বিব্রতকর। আমিতো আমার চাকরি করছি।’
উল্লেখ্য, ভারতে জাতীয় জিডিপিতে নারীদের অবদান মাত্র ১৭ শতাংশ। বৈশ্বিক জিডিপির অনুপাতে এটা অর্ধেকেরও কম।
"