ডা. মো. মফিজুর রহমান রাজীব

  ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭

অ্যানজিওপ্লাস্টি অ্যানজিওগ্রাম ও হার্টে রিং

অ্যানজিওপ্লাস্টি : অ্যানজিও (অহমরড়) শব্দের অর্থ হলো রক্তনালি এবং প্লাস্টি (চষধংঃু) শব্দের অর্থ হলো ঢিলা করে দেওয়া। এ পদ্ধতিতে রক্তনালির মধ্যে চর্বি জমে সরু হয়ে যাওয়া পথ প্রশস্ত বা ঢিলা করে দেওয়া হয়। যে পথে অ্যানজিওগ্রাম করা হয়েছিল সেই একই পথে ক্যাথেটারের সঙ্গে বেলুন প্রবেশ করানো হয়। তারপর ওই বেলুন ফুলিয়ে করোনারি ধমনির সরু অংশকে প্রশস্ত করা হয়। এতে করে ধমনির ভেতরের রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক হয়। ধমনির এ প্রশস্ততা ধরে রাখতে স্টেন বা রিং বসানো হয়। যদি দেখা যায়, ব্লকের সংখ্যা তিনের কম (অনেক সময় তিনটিও করা হয়) এবং ব্লকের পারসেন্টেজ ৭০ শতাংশের বেশি তাহলে সেখানে অ্যানজিওপ্লাস্টি বা বেলুনিংয়ের মাধ্যমে স্টেন বা রিং প্রতিস্থাপন করা হয়।

অ্যানজিওগ্রাম : এক্স-রের মাধ্যমে শরীরের ধমনিগুলো দেখাকে অ্যানজিওগ্রাম বলে। অবশ্য এ জন্য ধমনির মধ্যে এক ধরনের ডাই (রঞ্জক পদার্থ বা কন্ট্রাস্ট মিডিয়া) প্রবেশ করানো হয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অ্যানজিওগ্রাম করা হয় যেমনÑপায়ে পিএজি বা পেরিফেরাল অ্যানজিওগ্রাম, মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে সেরিব্রাল অ্যানজিওগ্রাম, কিডনিতে রেনাল অ্যানজিওগ্রাম, হার্টে করোনারি অ্যানজিওগ্রাম। আমাদের মনে রাখতে হবে, অ্যানজিওগ্রাম একটি পরীক্ষার নাম যার মাধ্যমে অ্যানজিওপ্লাস্টি বা স্টেনটিং বা রিং পরানো হয়।

করোনারি অ্যানজিওগ্রাম : করোনারি অ্যানজিওগ্রাম হলো হার্টের রোগ নির্ণয়ের একটি পরীক্ষা, হার্টে করোনারি আরটারি ডিজিজ বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ হলে করোনারি অ্যানজিওগ্রাম পরীক্ষাটি করানো হয়। এ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, করোনারি আর্টারির মধ্যে কতগুলো ব্লক আছে বা ব্লকগুলোর অবস্থান কোথায় বা কত পার্সেন্ট ব্লক আছে। অনেকেই মনে করেন, করোনারি অ্যানজিওগ্রাম পরীক্ষাটি করার জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয়। ব্যাপারটা মোটেই তা নয়, এজন্য পায়ের মোটা ধমনি বা হাতের ধমনিতে ক্যাথেটার (সরু প্লাস্টিক টিউব) ঢোকানোর জন্য চামড়ার নিচে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অবশ করে নেওয়া হয়।

স্টেনটিং বা রিং পরানো : অ্যানজিওপ্লাস্টির পরে ওই জায়গার প্রশস্ততা ধরে রাখতে ওই স্থানে রিং বসানোকে স্টেনটিং বলে। অনেকের ধারণা, স্টেনটিং বুক কেটে করা হয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। যে পথে অ্যানজিওগ্রাম করা হয়েছে ওই পথেই অ্যানজিওপ্লাস্টি করে স্টেনটিং বা রিং পরানো হয়। স্টেনটিং বা রিং পরানোর পরও ওই জায়গায় আবারও চর্বি জমতে পারে। তাই পরবর্তী সময়ে রক্তের চর্বি কমার ওষুধ, রক্ত জমাট না বাঁধার ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ মতো খেয়ে যেতে হয়। দুই ধরনের স্টেন বা রিং লাগানো হয়ে থাকে। ড্রাগ এলুটিং স্টেন (এটি খুব দামি ও ব্যয়বহুল) এবং মেটাল স্টেন।

লেখক :

মেডিসিন, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ

খিলগাঁও ডায়াবেটিক ও স্পেশালাইজড ডক্টর’স চেম্বার

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist