অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ
নানা কারণে কফ-কাশি
প্রায় সব বক্ষব্যাধিতেই কফ-কাশি দেখা দেয়। কিছু হৃদরোগেও কফ-কাশি লেগে থাকে। প্রত্যেকের জীবনেই কফ-কাশির কিছু না কিছু অভিজ্ঞতা থাকবেই। এখন প্রশ্ন হলো, কফ-কাশি কেন হয়?
মানুষের দেহে দুটি ফুসফুস রয়েছে। এ ফুসফুসগুলোর মধ্যে রয়েছে অসংখ্য বড়-ছোট শ্বাসনালি। সেই শ্বাসনালি বা ব্রঙ্কাস থেকেই তৈরি হয় কফ।
যক্ষ্মা
কফ-কাশির নাম নিলেই যে রোগের কথা প্রথমে মনে আসে, সেটি হলো যক্ষ্মা। যক্ষ্মা হলে কাশি লেগেই থাকে। প্রথমদিকে কফ পাতলা শ্লেষ্মা জাতীয় থাকে। অনেক সময় জীবাণু সংক্রমিত হয়ে সেটা পেকে হলুদ হয়ে যায়। একজন রোগী যদি তিন সপ্তাহের বেশি সময় অবিরাম কাশতে থাকে, তবে তাকে অবশ্যই কফ পরীক্ষার জন্য তাগিদ দিতে হবে। কফে যদি যক্ষ্মার জীবাণু ধরা পড়ে তবে তো কথা-ই নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, মাত্র ১০ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীর কফে যক্ষ্মা জীবাণু ধরা পড়ে। অর্থাৎ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যক্ষ্মা রোগ নির্ণীত হয় এক্স-রে পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে।
ব্রঙ্কিওকটেসিস
এবার আসা যাক ব্রঙ্কিওকটেসিসের কথায়। ব্রঙ্কিওকটেসিস নামের রোগটিতে পাকা পাকা হলুদ কফ নির্গত হয়। প্রধানত সকালের দিকেই এ দুর্গন্ধযুক্ত কফ বের হয়ে থাকে। ফুসফুসে এনএরোবিক জীবাণু সংক্রমণের ফলে এ দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। এ রোগের অন্যতম লক্ষণ হলোÑ কফের সঙ্গে নিয়মিত রক্ত যাওয়া। এ ধরনের অনেক রোগীকেই যক্ষ্মা ভেবে ভুল করে যক্ষ্মার ওষুধ খাওয়ানো হয়ে থাকে।
ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস
ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এমন একটি রোগ যা পরিবেশ দূষণ এবং মূলত ধূমপানের জন্য হয়ে থাকে। এ রোগে শ্বাসকষ্ট হলো অন্যতম প্রধান লক্ষণ। তবে কফ-কাশির সমস্যা লেগেই থাকে। কফ প্রথমে অল্প আঠালো এবং পিচ্ছিল হয়ে থাকে। পরে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে কফ পেকে হলুদ হয়ে যায়। তখন শ্বাসকষ্ট প্রবল হয় এবং জ্বর দেখা দেয়। হাঁপানি রোগীর কফ বের হতে চায় না। একটু কফ বের হয়ে গেলে রোগী শ্বাসযন্ত্রণা থেকে আরাম পায়।
নিউমোনিয়া
নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর কফ আবার আলাদা ধরনের হয়। কখনো সাদা কখনো হালকা হলুদ। নিউমোনিয়ার একপর্যায়ে কফের মধ্যে মরিচার মতো লাল রংমিশ্রিত থাকে।
সিনিয়র কনসালট্যান্ট
বক্ষব্যাধি বিভাগ
ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা
"