অধ্যাপক ডা. আর কে খন্দকার

  ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রভাবে শরীরের সব অঙ্গ-প্রতঙ্গে ক্ষতি হতে পারে। তবে মস্তিষ্ক, হার্ট ও কিডনি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রণে থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি সাতগুণ বেড়ে যায়, হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি ছয় গুণ এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তিন গুণ বাড়ে। আমাদের দেশে ১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ লোক উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। যদি কারো ৫০ বছর বয়সেও স্বাভাবিক রক্তচাপ থাকে এবং সে যদি ৮০ বছর বাঁচে, তাহলে তার উচ্চ রক্তচাপে ভোগার সম্ভাবনা শতকরা ৯০ ভাগ। সাধারণত আমরা বলে থাকি, ১১৫ থেকে ৭৫ সস.ঐম রক্তচাপ থাকা ভালো। তার ওপরে যদি রক্তচাপ থাকে, তবে তাতে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস, কিডনি রোগীদের এ ঝুঁকি আরো বেশি। রক্তচাপ যদি ১৪০ থেকে ৯০ সস.ঐম-এর ওপরে থাকে, তবে তাকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়। রক্তচাপের ঠিকমতো চিকিৎসা না করলে সেটা অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের পর্যায়ে পড়ে। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের ঠিকমতো চিকিৎসা করা উচিত।

আমাদের জানা ভালো-

১. স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০ থেকে ৮০ সস.ঐম বা এর কম।

২. যাদের উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ রয়েছে তাদের চিকিৎসার পর রক্তচাপ ১৩০/৮৫ সস.ঐম থাকা উচিত।

৩. চিকিৎসার পরও যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কিডনি রোগ আছে তাদের রক্তচাপ ১৩০/৮০ সস.ঐম থাকা উচিত।

কী কী কারণে আমাদের দেশে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপ দেখা যায় সাধারণ রোগীর জন্য

১. রোগীর শিক্ষার মান না থাকায় তারা রক্তচাপ সম্পর্কে অজ্ঞ।

২. আমাদের দেশে অধিকাংশ লোকের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকায় তারা চিকিৎসা নিতে পারে না।

৩. উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নানা ধরনের শঙ্কা কাজ করে।

৪. স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নীতিনির্ধারকদের এগিয়ে না আসা।

৫. উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় প্রয়োজনে সারা জীবন ওষুধ খেতে হয়। এ দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ না খাওয়ায় অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়।

ডাক্তারদের জন্য

১. ডাক্তার রোগীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা না করায় ঠিকমতো বোঝাতে পারেন না।

২. সঠিক রোগ নির্ণয় না করা।

৩. সঠিক ওষুধ না দেওয়া।

কী করে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে

যদি পরীক্ষা করে দেখা যায় উচ্চ রক্তচাপ হয়েছে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। একটি ওষুধে ভালো না হলে দুটি ওষুধ খেতে হবে, তাতেও ভালো না হলে তিনটি ওষুধ খেতে হবে। এছাড়া খাদ্যে চর্বি কম খেতে হবে, লবণ কম গ্রহণ করতে হবে, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, মানসিক চাপ কমাতে হবে, নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। তবেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ থাকা সম্ভব হবে।

চেয়ারম্যান, হাইপারটেনশন কমিটি

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist