ডা. মো. হারুনুর রশীদ
হিস্টিরিয়া
আগে হিস্টিরিয়া বলা হতো। এখনো অনেকে এই রোগকে হিস্টিরিয়া হিসেবেই জানে। যদিও বর্তমানে এ রোগের বৈজ্ঞানিক নাম কনভারশন ডিজঅর্ডার। বর্তমানে এই নামকরণের কারণ হলো কনভারশন ডিজঅর্ডার রোগীর স্টেস বা মানসিক দ্বন্দ্ব শারীরিক সিমটম হিসেবে প্রকাশ পায়। এটা রোগীর ইচ্ছাকৃত নয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে এটি রোগীর অবচেতন মন থেকে বের হয়। এই রোগ সাধারণত কম বয়সী মেয়েদেরই বেশি হয়। তবে এটা যে কোনো বয়সে হতে পারে। ছেলেদেরও এই রোগ হয়। তবে অনেক কম।
* ইতিহাস : হিস্টিরিয়াকে আগে ব্রেইনের রোগ মনে করা হতো না। হিস্টিরিয়া নামের অর্থ জরায়ু। আগে এটাকে জরায়ুর রোগ বলে ধরা হতো। হিস্টিরিয়া নামটি দিয়েছেন প্রথম হিপোক্রেট। পরবর্তীকালে ফ্রয়েড এটাকে ব্রেইনের রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। প্রায় দেড়শ’ বছর আগে কিভাবে ওই যুগে তিনি এটাকে ব্রেইনের রোগ হিসেবে ধরেছিলেন তা সত্যি আশ্চর্য বিষয়। পরে জেন মারটিন সারফেও একই কথা বলেন। ওই সময় থেকে আজ পর্যন্ত একে ব্রেইনের রোগ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এটা জরায়ুর রোগ, এটি আসলে একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল।
* রোগের কারণ :
১. জেনেটিক, ২. সাইকো ডায়ানমিক, ৩. পরিবেশগত মানসিক চাপ বা দ্বন্দ্ব, ৪. অস্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, ৫. কালচারাল প্রভাব।
* রোগের লক্ষণগুলো : ব্যথার স্পর্শের অনুভূতি কমে যাওয়া বা না থাকা, অন্ধত্ব, কানে না শোনা, একটি বস্তুকে দুটি দেখা ভিসুয়াল হেলুশিনেশন হতে পারে যাতে চোখে এমন কিছু দেখতে পারে যা কেবল সে দেখবে। প্যারালাইসিসÑহাত, পা, শরীরের অন্যান্য অংশ যাতে নিউরোলজিক্যাল কোনো অস্বাভাবিকতা থাকে না।
* গিলতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট, বার বার জ্ঞান হারানো ইত্যাদি।
* চিকিৎসা : সাইকোলজিক্যাল প্রধান চিকিৎসা। রোগী ও তার স্বজনকে সাহস দিতে হবে। আশ্বস্ত করতে হবে প্রথমে * তারপর রোগীর সবার দিকে নজর দিতে নিষেধ করতে হবে পরিবারকে। * যেমন শ্বাসকষ্টের রোগীকে অক্সিজেন, প্যারালাইজড রোগীকে হুইল চেয়ার দেওয়া যাবে না কোনভাবেই, তাহলে রোগ স্থায়ী রূপ নেবে।* রোগের কারণ খুঁজে বের করে দ্রুত সমাধান বের করতে হবে। * রোগীকে স্বাভাবিক কাজকর্মে লাগাতে হবে।
* পরিণতি : সাধারণভাবে যদি অল্প সময়ের জন্য হয়, সঠিক আচরণগত চিকিৎসা দিতে হবে। আর বেশি এটেনশন দিলে, সঠিক কারণ বের করে দূর না করলে তা জটিল ও দীর্ঘ মেয়াদি হতে পারে। এতে সমাজে ব্যাপক সচেতনতা দরকার।
সহকারী অধ্যাপক
ডেল্টা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
০১৭৫৯-৯১১৬১১
প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যাল, ঢাকা।
"