অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

  ২১ মে, ২০১৭

গরম ও আর্দ্রতায় সুস্থ থাকতে

আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়টায় গরম ও আর্দ্রতা বেড়ে যায়। এ কারণে এই সময়ে স্বাস্থ্যগত সমস্যা ও রোগ-ব্যাধি বেড়ে যায়। ঘামাচি কিংবা পানিস্বল্পতা গরমের অন্যতম সমস্যা। কেউ কেউ হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। এর সঙ্গে হতে পারে অবসাদ, অ্যালার্জি, সূর্যরশ্মিতে চামড়া পুড়ে যাওয়া, হজমের অভাবে বমি বা ডায়রিয়াজনিত রোগ ইত্যাদি। গরমের এসব সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য যা করতে হবে-

যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াময় স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।

বাইরে বের হলে সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। পরনের কাপড় হতে হবে হালকা, ঢিলেঢালা ও সুতির। শরীর যতটা সম্ভব ঢেকে রাখতে হবে।

শরীরের উন্মুক্ত স্থানে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, যা রোদে পোড়া থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেবে।

প্রচুর পানি পান করতে হবে। ঘামের সঙ্গে পানি ও লবণ দুই-ই বেরিয়ে যায়, এজন্য লবণাক্ত পানীয়, যেমন- খাওয়ার স্যালাইন, ফলের রস ইত্যাদি পান করতে হবে। বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। চা ও কফি যথাসম্ভব কম পান করা উচিত।

নিয়মিত গোসল করতে হবে এবং শরীর ঘাম ও ময়লামুক্ত রাখতে হবে।

শ্রমসাধ্য কাজ যথাসম্ভব কম করতে হবে। কাজের মাঝে কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি ও স্যালাইন পান করতে হবে।

গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলুন। সাধারণ খাবার, যেমন- ভাত, ডাল, সবজি, মাছ ইত্যাদি খাওয়া ভালো। খাবার যেন টাটকা হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। নানা রকম ফল, যেমন- আম, তরমুজ ইত্যাদি এবং লেবুর শরবত শরীরের প্রয়োজনীয় পানি ও লবণের ঘাটতি

মেটাবে।

শিশু বা বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। শিশু স্কুলে গেলে কিংবা মাঠে খেলাধুলা করতে গেলে যেখানে-সেখানে পানি বা শরবত যেন না খায়, বিশুদ্ধ পানি বা পানীয় যেন গ্রহণ করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। বয়স্ক ব্যক্তিরা যেন অনেকক্ষণ রোদে চলাফেরা বা কাজকর্ম না করে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

প্রচ- গরমে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। রোগীকে দ্রুত শীতল কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হবে। ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিতে হবে। এটা সম্ভব না হলে পাখা দিয়ে বাতাস করতে হবে। রোগীর গরম কাপড় খুলে দিতে হবে এবং ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। সম্ভব হলে গোসল করাতে হবে। রোগীকে প্রচুর পানি এবং খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। যদি কেউ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং অজ্ঞান হয়ে যায়, তাহলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা কমাতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে; ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই।

গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে সচেতনভাবে পদক্ষেপ নিলে দহনজনিত স্বাস্থ্যসমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

লেখক : চেয়ারম্যান, মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist