ডা. নুসরাত জাহান
গর্ভকালীন ক্লান্তিমুক্ত থাকতে
গর্ভাবস্থায় মায়েরা খুব সহজেই ক্লান্তি বোধ করেন। বিশেষ করে গর্ভের প্রথম ১২ সপ্তাহে ও শেষ দিকে। কনসিভ করার পরপর মায়ের শরীরে যে হরমোনের তারতম্য ঘটে, এর জন্যই মায়েদের কিছু উপসর্গ দেখা দেয়; যেমনÑ ক্লান্ত হওয়া, বিষণœ বোধ করা, জ্বর জ্বর লাগা ইত্যাদি। গর্ভের শেষ দিকে মায়েরা তাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণে ঘন ঘন ক্লান্তি বোধ করেন। এ ছাড়াও ক্লান্তির অন্য কারণগুলো হলো নিদ্রাহীনতা, দুশ্চিন্তা ও অপর্যাপ্ত খাবার। এ সময় ক্লান্তি বোধ করা সাধারণ শারীরবৃত্তীয় ঘটনা হলেও কিছু কিছু মেডিকেল কারণও এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে। যেমনÑ রক্তশূন্যতা, থাইরয়েডগ্রন্থির অ্যাবনরমালিটি ও বিষণœতা থেকেও ক্লান্তি হতে পারে।
কীভাবে ক্লান্তি দূর করা যাবে?
* ক্লান্তি এবং অন্য কোনো রোগ থাকলে এর জন্য যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে।
* পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য ও পানীয় পান করতে হবে। একবারে বেশি না খেয়ে ৩ বা ৪ ঘণ্টা পরপর অল্প পরিমাণে খেতে হবে।
* দিনে ২ ঘণ্টা ও রাতে ৮ ঘণ্টা বিশ্রামে থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থার শেষ দিকে নিদ্রাহীনতা একটি পরিচিত সমস্যা, যা এ সময়কে কঠিন করে তোলে। এটি দূর করার কিছু নিয়ম নিচে দেওয়া হলোÑ
* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ২ বা ৩ ঘণ্টা আগেই রাতের খাবার সেরে নিন।
* ঘুমানোর আগে উষ্ণ পানির গোসল, এক কাপ গরম দুধ আপনার নিদ্রায় সহায়ক হবে।
* ঘুমানোর সময় ছাড়া বিছানায় যাবেন না। অলস সময় না কাটিয়ে স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যান এবং প্রতিদিন কিছু সময় যে কোনো মধ্যম মানের ব্যায়াম (হাঁটা, সাঁতার কাটা) আপনার দুশ্চিন্তা কমাতে ও ঘুমাতে সাহায্য করবে।
* চা, কফি, কোকজাতীয় পানীয় মস্তিষ্কের জন্য উত্তেজক ও নিদ্রাহীনতার কারণ। তাই যথাসম্ভব পরিহার করুন।
* ঘুমানোর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনার ঘুমানোর জায়গাটি যথেষ্ট আরামদায়ক ও কোলাহলমুক্ত কিনা।
এর পরও যদি ঘুমানোর সমস্যা থেকে যায়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন কিছু ওষুধের সাহায্যে আপনার নিদ্রাহীনতা কাটিয়ে ফ্রেশ বা ক্লান্তিমুক্ত হতে পারেন।
লেখক :
সহকারী অধ্যাপক, অবস-গাইনি
ডেল্টা মেডিকেল কলেজ
মিরপুর, ঢাকা
"