ডা. এম ইয়াছিন আলী

  ০৯ জুলাই, ২০১৯

গাউট বা গেঁটেবাত

আমাদের শরীরে রক্তের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যার মাত্রা বেড়ে গেলে বিভিন্ন অস্থি-সন্ধি বা জয়েন্টে প্রদাহ হয়, এ প্রদাহকে গাউট বা গেঁটেবাত বলা হয়।

কারণ

জেনেটিক এ ক্ষেত্রে জন্মগতভাবে কারো শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন বেশি হয় এবং প্রস্রাবের সঙ্গে কম মাত্রায় নির্গত হয়।

কিডনি ফেইলর বা ত্রুটিযুক্ত রেচনের জন্য রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।

দীর্ঘ লিউকেমিয়ায় ভুগলে।

হাইপারথায়রইডিজম বা থায়রইড হরমোন বেশি থাকলে।

ডাই-ইউরোটিক ও পাইরাজিনামাইড ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করলে।

মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে।

লেড পয়জনিং হলে।

গ্লুকোজ-৬ ফসফেটের অভাব হলে ইত্যাদি।

লক্ষণ

প্রথমত এটা পায়ের বৃদ্ধাঙুলে আক্রমণ করে। হঠাৎ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখা যায়, পায়ের বৃদ্ধাঙুলে পন্ড ব্যথা। আঙুল ফুলে যায় ও লাল হয়ে যায়।

শুধু পায়ের বৃদ্ধাঙুলে নয়, এটা হাত ও পায়ের অন্যান্য আঙুল, কব্জি, গোড়ালি, কনুই ও হাঁটুসহ বিভিন্ন জয়েন্টে হতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, হঠাৎ তীব্র ব্যথা হয়, কয়েকদিন পর ব্যথার তীব্রতা কমে যায়; কিন্তু কিছুদিন পর আবার ব্যথা দেখা দেয়।

এমনকি রোগী চলাফেরা ও কাজকর্ম করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

চিকিৎসা ও পরামর্শ

চিকিৎসা নির্ভর করে এর কারণের ওপর। তার পরও দ্রুত ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য এলুপেরিনল বা ফেবুস্ট্যাট জাতীয় ওষুধের সঙ্গে এনএসআইডি ব্যবহার করতে হয়।

রোগীর খাবারের বিষয়ে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়, এমন খাবার বন্ধ রাখতে হবে। যেমন উচ্চ আমিষ জাতীয় খাদ্য, গরুর গোশত, মসুরের ডাল, শিমের বিচি, বরবটি, লিভার, কলিজা, পুঁইশাক ইত্যাদি খাবার খাবেন না।

আক্রান্ত স্থানে গরম সেক দিতে পারেন।

রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, যেন প্রস্রাবের সঙ্গে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বের হয়ে যেতে পারে।

কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে।

অধিক ওজনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে শরীরের ওজন কমাতে হবে।

মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা পরিত্যাগ করতে হবে।

লেখক :

চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট

ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল

ধানমন্ডি, ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close