ডা. মো. মফিজুর রহমান রাজীব

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

হার্টে রিং পরানো ও এনজিওগ্রাম কী?

এনজিওগ্রাম : এক্স-রের মাধ্যমে শরীরের ধমনিগুলো দেখাকে এনজিওগ্রাম বলে। অবশ্য এজন্য ধমনির মধ্যে এক ধরনের ডাই (রঞ্জক পদার্থ বা কন্ট্রাস্ট মিডিয়া) প্রবেশ করানো হয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এনজিওগ্রাম করা হয়, যেমন পায়ে পিএজি বা পেরিফেরাল এনজিওগ্রাম, মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে সেরিব্রাল এনজিওগ্রাম, কিডনিতে রেনাল এনজিওগ্রাম, হার্টে করনারি এনজিওগ্রাম (CAG)। আমাদের মনে রাখতে হবে, এনজিওগ্রাম একটি পরীক্ষার নাম, যার মাধ্যমে এনজিওপ্লাস্টি বা স্টেনটিং বা রিং পরানো হয়।

করনারি এনজিওগ্রাম (CAG) : করনারি এনজিওগ্রাম হলো হার্টের রোগ নির্ণয়ের একটি পরীক্ষা, হার্টে করনারি আর্টারি ডিজিজ বা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ হলে করনারি এনজিওগ্রাম পরীক্ষাটি করানো হয়। এ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, করনারি আর্টারির মধ্যে কতগুলো ব্লক আছে বা ব্লকগুলোর অবস্থান কোথায় বা কত পার্সেন্ট ব্লক আছে। অনেকেই মনে করেন, করনারি এনজিওগ্রাম পরীক্ষাটি করার জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয়। ব্যাপারটি মোটেই তা নয়, এজন্য পায়ের মোটা ধমনি (Femoral artery) বা হাতের ধমনিতে (Radial artery) ক্যাথেটার (সরু প্লাস্টিক টিউব) ঢোকানোর জন্য চামড়ার নিচে লোকাল এনেসথেসিয়া দিয়ে অবশ করে নেওয়া হয়।

এনজিওপ্লাস্টি : এনজিও (Angio) শব্দের অর্থ হলো রক্তনালি এবং প্লাস্টি (Plasty) শব্দের অর্থ হলো ঢিলা করে দেওয়া। এ পদ্ধতিতে রক্তনালির মধ্যের চর্বি জমে সরু হয়ে যাওয়া পথ প্রশস্ত বা ঢিলা করে দেওয়া হয়। যে পথে এনজিওগ্রাম করা হয়েছিল, সেই একই পথে ক্যাথেটারের সঙ্গে বেলুন প্রবেশ করানো হয়। তারপর ওই বেলুন ফুলিয়ে করনারি ধমনির সরু অংশকে প্রশস্ত করা হয়। এতে করে ধমনির ভেতরের রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক হয়। ধমনির এ প্রশস্ততা ধরে রাখতে স্টেন বা রিং বসানো হয়। যদি দেখা যায়, ব্লকের সংখ্যা তিনের কম (অনেক সময় তিনটিও করা হয়) এবং ব্লক ৭০ শতাংশের বেশি; তা হলে সেখানে এনজিওপ্লাস্টি বা বেলুনিংয়ের মাধ্যমে স্টেন বা রিং প্রতিস্থাপন করা হয়।

স্টেনটিং বা রিং পরানো : এনজিওপ্লাস্টির পর ওই জায়গার প্রশস্ততা ধরে রাখতে ওই স্থানে রিং বসানোকে স্টেনটিং (Stenting) বলে। অনেকের ধারণা, স্টেনটিং বুক কেটে করা হয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। যে পথে এনজিওগ্রাম করা হয়েছে ওই পথেই এনজিওপ্লাস্টি করে স্টেনটিং বা রিং পরানো হয়। স্টেনটিং বা রিং পরানোর পরও ওই জায়গায় আবারও চর্বি জমতে পারে। তাই পরবর্তী সময়ে রক্তের চর্বি কমার ওষুধ, রক্ত জমাট না বাঁধার ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শমতো খেয়ে যেতে হয়। দুই ধরনের স্টেন বা রিং লাগানো হয়ে থাকে। ড্রাগ এলুটিং স্টেন (এটি খুব দামি ও ব্যয়বহুল) ও মেটাল স্টেন।

লেখক :

মেডিসিন, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ

খিলগাঁও ডায়াবেটিক ও স্পেশালাইজড ডক্টরস চেম্বার

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close