স্বাস্থ্য ডেস্ক

  ৩১ অক্টোবর, ২০১৮

অ্যালকোহল পান ক্ষতিকর

স্বল্প পরিমাণে অ্যালকোহল তথা মদ্যপান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে একটা ধারণা প্রচলিত আছে। কিন্তু সেটাকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন একটি গবেষণা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

কোনো পরিমাণে মদ্যপানই স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয় বলে দেখা গেছে বিখ্যাত জার্নাল ল্যান্সেটে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এই গবেষণায়। ২৪৩ প্রতিষ্ঠানে ৫১২ বিজ্ঞানীর অধীনে ব্যাপক পরিসরের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা।

গবেষকরা এক হাজারেরও বেশি মদ সম্পর্কিত গবেষণা ও তথ্যসূত্র থেকে একটি ডেটাবেইজ তৈরি করেছেন। এতে ১৯৫টি দেশের ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব¡ সম্পর্কে তথ্যও রয়েছে। মদ্যপান ২৩টি অসুখের ঝুঁকি বৃদ্ধিতে কতটা প্রভাব ফেলে, তা খতিয়ে দেখতে এই তথ্য সংগ্রহ করেন তারা।

গবেষকরা দেখতে পান, যত কম পরিমাণেই মদ খাওয়া হোক, তা অসুখের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। একমাত্র মদ্যপান না করলে এই প্রভাব থেকে আপনি মুক্ত থাকতে পারবেন।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের অধ্যাপক ইমানুয়েলা গাকিডু এই গবেষণাপত্রের একজন অন্যতম সদস্য। তিনি বলেন, ‘যে কথাটা কেউ বিশেষ খেয়াল করে না, তা হলো কোনো পরিমাণে মদ্যপানই আপনার জন্য নিরাপদ নয়। দিনে একবার বা দুবার মদ্যপান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, এটা ভাবা এখন আর ঠিক নয়। আপনার জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো তা হচ্ছে-মোটেও মদ্যপান না করা।’

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৬ সালে বিশ্বের ২৮ লাখ মানুষ মদ্যপানজনিত কারণে মারা গেছে। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় প্রধান ঝুঁকির কারণ হচ্ছে মদ্যপান।

বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ মদ্যপান করে থাকে, যাদের জন্য এই গবেষণাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী পরিমিত মাত্রায় মদ্যপান নিশ্চিতভাবেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু এখন স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের মদ্যপানের অভ্যাস নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

১৯৯০-এর দশকে ‘ফ্রেঞ্চ প্যারাডক্স’-এর ওপর কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর এই ধারণা মানুষের মনে বদ্ধমূল হয়। ফরাসিরা প্রচুর তৈলাক্ত খাবার খেলেও তাদের হৃদরোগ কম হয়, এই বিষয়টি ‘ফ্রেঞ্চ প্যারাডক্স’ অভিহিত করা হয়। কয়েকটি গবেষণায় দেখা যায়, মদ্যপানের কারণে চর্বিযুক্ত খাবার শরীরের বেশি ক্ষতি করতে পারে না।

কিন্তু নতুন গবেষণাটি থেকে জানা যাচ্ছে, পরিমিত মদ্যপানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমলেও অন্যান্য বহু স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পায় এবং এতে লাভের চেয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতিই হয় বেশি। এসব ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্তন ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসার, স্ট্রোক, যক্ষ্মা, সহিংস মনোভাব, নিজের শরীরে আঘাত করা এবং গাড়ি দুর্ঘটনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close