ডা. মোহাম্মদ সাইফউল্লাহ

  ২১ জুন, ২০১৮

হার্ট অ্যাটাক

হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনটি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। এগুলো হলো-

* পর্যায়ক্রমে দৈনন্দিন কাজ শুরু করা

* পরবর্তী হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ

* হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী পুনর্বাসন

হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী করণীয়

হার্ট অ্যাটাক হওয়ার দিন (প্রথম ২৪ ঘণ্টা) : বিছানায় পূর্ণ বিশ্রাম নেবেন। এ সময় তরল খাবার (দুধ, হরলিকস, স্যুপ ইত্যাদি) খাবেন। পায়খানা-প্রস্রাবের জন্য বেডপ্যান ব্যবহার করবেন।

দ্বিতীয় দিন (২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা) : এক বা দুবার ১৫ থেকে ৩০ মিনিট বিছানার পাশে চেয়ারে বসবেন। এ সময় গরম খাবার (জাউ, ভাত, ফিরনি, সেমাই, ইত্যাদি) খাবেন। এ দিন বিছানার পাশে কমোড ব্যবহার করতে পারেন।

তৃতীয় দিন (৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা) : ওয়ার্ডের ভেতর হাঁটবেন এবং হেঁটে টয়লেটে যাবেন। এ সময় স্বাভাবিক শক্ত খাবার শুরু করবেন।

চতুর্থ দিন (৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা) : একই তলায় ধীরে ধীরে হাঁটার দূরত্ব বাড়াবেন।

পঞ্চম দিন (৯৬ থেকে ১২০ ঘণ্টা) : সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করবেন।

পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে রোগী নিজ বাসস্থানে ফিরে যাবেন।

সাত থেকে ১৪ দিন : বাড়ির উঠানে বা বাগানে হাঁটবেন।

১৪ থেকে ২৮ দিন : আস্তে আস্তে হাঁটার দূরত্ব ও সময় বাড়িয়ে দৈনিক ২০ থেকে ৩০ মিনিট করতে হবে।

২৮তম দিনে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করবেন এবং ইটিটি করবেন।

কাজের ধরন অনুযায়ী চার থেকে ১২ সপ্তাহ পর কার্যক্ষেত্রে যোগ দেন।

দুই থেকে ছয় সপ্তাহ পর স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে স্বাভাবিক মেলামেশা করতে পারবেন।

দুই থেকে ছয় সপ্তাহ পর যারা হালকা গাড়ি চালান তারা গাড়ি চালাতে পারবেন। তবে যারা ভারী যানবাহন (বাস, ট্রাক ইত্যাদি) বা অ্যারোপ্লেন চালান, তাদের বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পর এসব যানবাহন চালানো উচিত।

পরবর্তী হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে যা করবেন

বেশি ক্যালরিসমৃদ্ধ খাদ্য বর্জন করতে হবে। মদ্যপান, জর্দা, তামাক ধূমপান বন্ধ করতে হবে (ধূমপান ছাড়ার ১০ বছর পর্যন্ত ঝুঁকি থেকে যায়)। অতিরিক্ত চা-কফি, ফাস্টফুড টিনজাত ও শুকনো খাবার, কোমলপানীয় বর্জন করতে হবে। মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রম কম করাও হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। হৃদরোগ বংশগতও হয়। অনিদ্রা, টেনশন, ভয়, ক্রোধ, শোক, হতাশা, রাগ, প্রতিশোধপ্রবণতা, হিংসা-বিদ্বেষ, অশান্তি, উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় বা চেঁচামেচি (চিৎকার), অস্থিরতা, ক্ষমা করতে না পারা-এসব মানসিক চাপ বর্জনীয়।

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পরও তা নিয়মিত নিয়ন্ত্রিত রাখা (সপ্তাহে এক দিন রক্তচাপ পরীক্ষা, মাসে একবার রক্তের সুগার দেখা, তিন মাস পর পর লিপিড প্রোফাইল ও ছয় মাস পর পর ইসিজি ও বছরে একবার করে ইটিটি করা উচিত।

রক্তের লিপিড প্রোফাইলে সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ খাবেন।

প্রতিদিন ৩০ মিনিট মুক্ত বাতাসে ব্যায়াম বা দ্রুত হাঁটা (সহনীয়), খেলাধুলা, সাঁতারকাটা, সাইকেল চালানো, বাগান করা এবং সুযোগ পেলেই হাঁটা হৃদরোগ প্রতিরোধক, মাদকাসক্তি হৃৎপি-ের শত্রু।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, কার্ডিওলজি বিভাগ, এমএইচ শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, তেজগাঁও, ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist