ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ
ফার্স্ট এইড বক্সে যা থাকা জরুরি
প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত উপকরণাদি যে নির্দিষ্ট বাক্সে থাকে তাকে ফার্স্ট এইড বক্স (ঋঅই) বলে। ফার্স্ট এইড বক্স একটি অতি দরকারি জিনিস। প্রয়োজনের সময় দৌড়াদৌড়ি না করে হাতের নাগালে ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে খুব সহজেই রোগীকে কিছুটা সামলানো যায়। এতে রোগীসহ আশপাশের লোকজনের অস্থিরতাও অনেকটা কমে। তাই একটা ফার্স্ট এইড বক্স থাকা ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সবার মোটামুটি জ্ঞান থাকা দরকার। প্রয়োজনে তা খুব কাজে দেয়। ফার্স্ট এইড বক্স বহনযোগ্য। এর উভয় দিকে FIRST AID BOX লেখা থাকে এবং ওপরে একটি বাঁকা লাল রঙের অর্ধচন্দ্রের ছবি থাকে।
ফার্স্ট এইড বক্স স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, কলকারখানায় এমনকি বাসাবাড়িতে বা গাড়িতেও রাখা যায়। বাসায় ও গাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফার্স্ট এইড বক্স থেকে প্রয়োজনের জিনিসটা তুলে নেওয়া যায়। ফার্স্ট এইড বক্সে সাধারণত যেসব উপকরণ থাকে তা নিম্নরূপ-
১. জীবাণুমুক্ত গজ পিস : ক্ষত হতে রক্ত পড়া বন্ধ করে ও জীবাণুসংক্রমণ কমায়। এটি ক্ষতস্থানকে নিরাপদে রাখে, ময়লা হতে দেয় না এবং ক্ষত থেকে নিঃসৃত তরল পদার্থ শুষে নেয়।
২. রোলার ব্যান্ডেজ : ড্রেসিংকে তার জায়গায় ভালোভাবে আটকে রাখার জন্য বা অতিরিক্ত রক্তপাত হলে ব্যান্ডেজের ওপর চাপ দিয়ে পেঁচিয়ে রক্ত বন্ধ করতে রোলার ব্যান্ডেজ ব্যবহৃত হয়। হাতে প্লাস্টার করা হলে তা জায়গামতো রাখতে, সিøঙ (SLING) বানাতে রোলার ব্যান্ডেজ প্রয়োজন হয়।
৩. কাঁচি : ক্ষতের পাশে প্রয়োজনে পরনের কাপড় কাটা, গজ, ব্যান্ডেজ, মাথার চুল ইত্যাদি কাটার জন্য কাঁচি দরকার।
৪. লিকোপ্লাস্ট : ব্যান্ডেজ ক্ষতের ওপর আটকানোর জন্য দরকার।
৫. অ্যান্টিসেপটিক লোশন বা ক্রিম : ক্ষত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে দরকার হয়। যেমন-স্যাভলন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, পভিসেভ ইত্যাদি।
৬. টুইজারস (TWEEZERS) : শরীর থেকে কাঁটা, কোনো ক্ষুদ্র বস্তু বা স্পিøন্টার (SPLINTER), পোকামাকড়ের শূল ইত্যাদি সরাতে বেশ ফলদায়ক। এটি ধাতু বা প্লাস্টিকের তৈরি ও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
৭. ক্রেপ ব্যান্ডেজ : হাড় ফেটে গেলে বা কোথাও মচকে গেলে ক্রেপ ব্যান্ডেজ ব্যবহারে ব্যথা কমে, ফোলাও ক্রমেই হ্রাস পায়।
৮. সেফটিপিন : কাঁটা বা ক্ষত থেকে কোনো স্পিøন্টার সরাতে, ব্যান্ডেজ আটকাতে ও স্পিঙ জায়গামতো ধরে রাখার জন্য সেফটিপিন একটি কাজের জিনিস। এটি হালকা, শক্ত ও নিরাপদ।
৯. এন্টিহিস্টামিন : যেমন-হিস্টাসিন, ফেক্সোফেনাডিন ইত্যাদি। এগুলো সর্দি, হাঁচি, কাশি, চুলকানি ও পোকার কামড়ের চিকিৎসায় সহায়ক।
১০. ব্যথার ওষুধ : যেমন-প্যারাসিটামল, আইবুপ্রুফেন ইত্যাদি।
১১. বার্ন ক্রিম : পোড়া জায়গায় ব্যথা কমাতে ও ঘা শুকাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন-বার্নল বা সিলভারজিন ক্রিম। অ্যালোভেরা জেল (GEL)) পোড়া, চুলকানি ও চামড়ায় র্যাশ হলে বেশ কার্যকর। ক্যালেন্ডুলা ও আরটিকা ইউরেন্স বার্ন ক্রিম দ্রুত ব্যথা কমায়।
"