ডা. মো. ইয়াকুব আলী
জরায়ুতে ক্যানসারের প্রধান কারণ
হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) : হিউম্যান পেপিলোমা বা এইচপি ভাইরাস জরায়ুমুখের ক্যানসারের একটি অন্যতম কারণ, তবে এটি একমাত্র কারণ নয়। যৌন সংযোগে এর সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমণের এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জরায়ুমুখের স্বাভাবিক কোষ পরিবর্তিত হতে থাকে এবং একসময় তা ক্যানসারে রূপ নেয়।
কীভাবে বুঝবেন : অতিরিক্ত সাদাস্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অতিরিক্ত অথবা অনিয়মিত রক্তস্রাব, সহবাসের পর রক্তপাত, মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর ও তলপেট ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গগুলো জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণ। যাদের অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে থাকে তাদের এ ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আবার ঘন ঘন বাচ্চা নেওয়ার কারণেও জরায়ু মুখে ক্যানসার হতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা : নিয়মিত পরীক্ষা করানোর মাধ্যমে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে যেসব মহিলার বয়স ৩০-এর বেশি (বাল্যবিবাহ হলে ২৫-এর বেশি) তাদের প্রতি তিন বছর পরপর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা জরায়ুমুখ পরীক্ষা করানো উচিত।
প্রতিরোধের উপায় : মেয়েদের বয়স ১০ বছর হলেই জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধক টিকা দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে মোট তিন ডোজ টিকা নিতে হয়। টিকা গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত পরীক্ষা করালে জরায়ুমুখ ক্যানসারের আক্রমণ হার কমিয়ে আনা যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, ওষুধের চেয়ে আচরণগত প্রতিরোধই এ রোগে বেশি কার্যকর। যেমনথ বাল্যবিবাহ রোধ, অধিক সন্তান প্রসব, ধূমপান, পানের সঙ্গে জর্দা, সাদাপাতা ও গুলের ব্যবহারে এ ক্যানসারে আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়ে। আবার সুষম খাবার গ্রহণ, দৈনিক তিন-চারবার ফল, শাকসবজি, তরকারি খাওয়া; পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ও সামাজিক অনুশাসন মান্য করা এ রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তবে গর্ভাবস্থায় এ রোগের টিকা প্রদানের অনুমোদন নেই। অন্যদিকে ক্যানসার হওয়ার পর এ টিকা আর কোনো কাজে আসে না।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, মেডিক্যাল অনকোলজি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট
"