ডা. এস এম বখতিয়ার কামাল

  ০২ জানুয়ারি, ২০১৮

বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণের চিকিৎসা

ব্রণ বয়ঃসন্ধির একটি সাধারণ রোগ। সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে (২৫ বছর বয়সের মধ্যে) মুখের ব্রণ মিশে যায়, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি বহু বছর থাকতে পারে। শতকরা ৯০ ভাগ টিনএজার এ রোগে আক্রান্ত হয়। ব্রণ মুখমন্ডলকে সুশ্রী থেকে বিশ্রী করে ফেলে। এতে দাগ বা গর্ত যাতে না হয় সেজন্য সৌন্দর্য সচেতন অনেকেই এ রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। ব্রণ থেকে মুক্ত বা ব্রণে আক্রান্তকারী যেসব বিষয় অনুসরণ করতে পারেন তা হলোÑ ব্রণ খোঁটা বা চিমড়ানো যাবে না, ছাতা বা ক্যাপ ছাড়া রোদে বের হওয়া যাবে না, মুখে যে কোনো ধরনের কসমেটিক ব্যবহার করা যাবে না, টেনশনমুক্ত থাকতে হবে। খুব বেশি সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করা যাবে না, চুলে বেশি তেল ব্যবহার করা যাবে না, চুলে হেয়ার জেল বেশি ব্যবহার করা যাবে না। উপরোক্ত কারণগুলো ব্রণের জন্য দায়ী। তাই এসব এড়িয়ে চলতে হবে।

ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা

বর্তমানে কেমিক্যাল পিলিং মাইক্রোড্রাম এবং কমেভো এক্সট্রাক্সন ব্রণের অত্যাধুনিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ব্রণ আক্রান্ত রোগীর ব্রণ সম্পর্কে সাময়িক ধারণা থাকা আবশ্যক। ব্রণ সাধারণত লোমকূপ ও তার সঙ্গে অবস্থিত তেলগ্রন্থির মুখের প্রদাহের জন্য হয়। ব্রণের প্রাথমিক ক্ষত হচ্ছে কমেডন, যা দুই ধরনের। এদের মধ্যে অগভীর কমেডনগুলো বাইরে থেকে কালো দেখা যায়, তাকে ব্লাকহেড বলে। গভীর কমেডনগুলো বাইরে থেকে সাদা দেখা যায়। তাই তাকে হোয়াইটহেড বলে। এছাড়া ছোট দানা, বড় দানা, পুঁজসহ দানা থাকতে পারে। ব্রণ সাধারণত মুখ, গলা, বুক, পিঠ ও বাহুর ওপরের অংশে হয়। ব্রণ কেন হয়, তার সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় হয়নি। তবে লোমকূপ ও তার সঙ্গে অবস্থিত তেলগ্রন্থির মুখের ত্রুটি, বয়ঃসন্ধিকালে অ্যান্ড্রোজেন নামে হরমোনের আধিক্য। প্রি-একনি নামে এক ধরনের জীবাণুর আক্রমণকে ব্রণের কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়। এছাড়া বংশগত কারণে ব্রণ হয়। সাধারণ চিন্তাভাবনায় ব্রণ হয় না। তবে অত্যধিক মানসিক চাপে, শরীরের ভেতর থেকে অ্যান্ড্রোজেন নামে এক ধরনের নিঃসরণ বেড়ে গিয়ে ব্রণ সৃষ্টি করে। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের মধ্যবয়সে ব্রণ হয় অত্যধিক কসমেটিক ব্যবহারে। এছাড়া মধ্যবয়সী মহিলাদের ব্রণ হয় অত্যধিক কসমেটিক ব্যবহার, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ও মাসিকের অনিয়মে। বয়ঃসন্ধির শুরুতে যে ব্রণ ওঠে তা ন্যাচারাল। বর্তমানে অনেকভাবেই ব্রণের চিকিৎসা হচ্ছে। কোনো একটি নির্দিষ্ট ওষুধ সব রোগীর জন্য ভালো নয়। প্রত্যেক রোগীর জন্য তার স্কিন টাইপ, ব্রণের ধরন, ব্রণের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। আক্রান্ত স্থানে লাগোনো ভিটামিন-এ জাতীয় ক্রিম সাধারণত সহনশীল ও ভালো। সাধারণ ওষুধ ব্যবহারের এক মাসের মধ্যে এর ফল দেখতে পাওয়া যাবে।

ব্রণ আক্রান্ত রোগীর সাবধানতা

ব্রণ খুঁটলে নখের জীবাণু দ্বারা ক্ষত স্থানে ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশন হয়ে স্থায়ী দাগ ও গর্ত হতে পারে। তাই নখ দিয়ে খুঁটা উচিত নয়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের চেয়ে বেশিবার ওষুধ ব্যবহার ব্রণ দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে না। বরং বেশি করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললে চিকিৎসার পর বেশি ব্রণ ওঠার কথা নয়। তারপরও যদি নতুন করে ব্রণ উঠে তাহলে চিকিৎসা নিতে হবে।

সহকারী অধ্যাপক, চর্ম যৌন অ্যালার্জি

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

কামাল স্কিন সেন্টার

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist