ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৯ নভেম্বর, ২০১৭

হতাশ করলেন গেইল-ম্যাককালাম

কুমিল্লার চতুর্থ জয়

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বাইরে টিকিটের হাহাকার। ভেতরে ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই। এবারের বিপিএলে এদিন সম্ভবত ঢাকা-পর্বের সবচেয়ে বেশি দর্শকের সাক্ষী হলো মিরপুরের গ্যালারি। টি-টোয়েন্টি রাজাদ্বয়ের ব্যাটে চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখতেই স্টেডিয়ামমুখী হয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু হতাশা নিয়েই ঘরে ফিরতে হয়েছে তাদের। যে আশায় বুক বেধেছিলেন তারা, সেটা পূরণ হয়নি। সমর্থকদের নিরাশার কারণ, ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের স্বরূপ দেখতে না পারাটা। এ মানিকজোড়কে বোতলবন্দি করে ১৪ রানের জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আসরে এটা তামিম-নবিদের চতুর্থ জয়। ৭ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৮। পক্ষান্তরে জয় দিয়ে শুরু করা রংপুর এ নিয়ে টানা ৩ ম্যাচ হারল।

প্রথম ম্যাচ বলেই কিনা ব্যাট হাতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন না গেইল-ম্যাককালাম। কাল দুজনই ব্যাট হাতে ছিলেন নিষ্প্রভ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের স্পিন আক্রমণের তোপে শুরুর আগেই থেমে গেছে গেইল-ম্যাককালাম ঝড়। দুজন মিলে করেছেন ৩০ রান। ৪ রান বেশি করেছেন ক্যারিবীয় ড্যাশিং ওপেনার। তাদের দুজনের সাজঘরে ফিরতে দেড়ি, কিন্তু গ্যালারিতে ভাটির টান লাগতে সময় লাগল না!

লক্ষ্যটা কঠিন ছিল না, সহজও নয়। উইকেট বিচারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের (১৫৩/৬) ছুড়ে দেওয়া টার্গেটটা হয়ে উঠল চ্যালেঞ্জিং। জবাব দিতে নেমে ৪.১ ওভারে ৩১ রান তুলেছিল রংপুর রাইডার্সের উদ্বোধনী জুটি। কিন্তু শুরুর জুটি বিচ্ছিন্ন হতেই ভয়াবহ ব্যাটিং ধসই নামল রংপুরের ইনিংসে। মাত্র ১ রানের মধ্যেই শেষ চার চারটে উইকেট। একে একে ফিরে গেলেন গেইল, কুশল পেরেরা, ম্যাককালাম ও শাহরিয়ার নাফীস। শেষের দুজনকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন মেহেদি হাসান। নাফীসের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন এই স্পিনার।

স্ট্যাম্প অক্ষুণœ রাখতে পারেননি ম্যাককালামও। মেহেদীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিটন দাশের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। কিউই ওপেনারকে ফিরিয়ে কিছুটা হলেও প্রায়শ্চিত্ত করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের উইকেটরক্ষক। মাত্র ২ রানে থাকা গেইলের শূন্যে উঠে যাওয়া বলটাকে যে গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি লিটন। তবু বেশি দূর এগোতে পারেননি ক্যারিবীয় সেনসেশন, ১৩ বলে ৩ চারে রশিদ খানের এলবির শিকারে পরিণত হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। রশিদের দ্বিতীয় শিকার পেরেরা, তাকে তালুবন্দি করেছেন মেহেদী।

৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের লাগামটা কুমিল্লার হাতে এনে দিয়েছিলেন মেহেদী। ৩ ওভারে ১৬ রান দিয়ে আরেক প্রান্ত থেকে রংপুরকে ভালোই চাপে রেখেছিলেন আফগান স্পিনার রশিদ। এ যুগলের স্পিন আক্রমণে রীতিমতো দিশাহার হয়ে উঠেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।

দুঃসময়ে রংপুরকে পথ দেখান মোহাম্মদ মিঠুন ও রবি বোপারা। পঞ্চম উইকেটে তাদের ৬৭ রানের জুটি কিছুটা হলেও লড়াইয়ের আশা জাগিয়েছিল। শেষ অবধি নাটকীয় কিছু হয়নি। হার ঠেকানোর কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেননি তারা। উইকেটের লাগাম টেনে রাখতে গিয়ে পরিস্থিতির দাবি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন দুজনই। ২৬ বলে এক চার-ছক্কায় ৩১ রান করেছেন মিঠুন। ৪৮ রানে বোপারার অপরাজিত ইনিংসটা ছিল ৪৮ বলের। যেখানে বাউন্ডারি মাত্র একটি। ১১ বলে একটি চার-ছক্কায় ১৭ রানে রান আউট হয়েছেন মাশরাফি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৯ রান তুলতে সক্ষম হয় রংপুর।

এর টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েস ও মারলন স্যামুয়েলসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় লড়াইয়ের পুঁজি স্কোর বোর্ডে জমা করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৩২ বলে ৪৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন ইমরুল। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ইনিংসটি সাজান টাইগার বাঁ-হাতি ওপেনার। ৩৪ বলে ৪১ রান এসেছে স্যামুয়েলসের ব্যাট থেকে। ৪টি চার ও ১টি ছক্কার মার ছিল তার ইনিংসে। দুজনেরই ঘাতক ছিলেন থিসারা পেরেরা। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ১৯ বলে ফিরেছেন ২১ রানে। কুমিল্লার পতন হওয়া উইকেটের দুটি করে শিকার করেছেন মাশরাফি ও পেরেরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist