আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সামরিক চুক্তি বাতিল
সু চির সম্মাননা ফিরিয়ে নিল যুক্তরাজ্য
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক পরিস্থিতির অবনতিতে কার্যকর ভূমিকা না রাখায় দেশটির নেতা অং সান সু চিকে দেওয়া সম্মাননা ফিরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে সামরিক চুক্তিসহ সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। যত দিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না হবে, তত দিন সব ধরনের যৌথ সামরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। গতকাল বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় থেরেসা মে এসব কথা বলেন।
থেরেসা মে বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যা হচ্ছে তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের সরকার পরিষ্কারভাবে ঘোষণা দিচ্ছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, যত দিন না তারা রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করবে।’ গত বছর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে ৪ লাখ ১২ হাজার ডলার ব্যয় করে যুক্তরাজ্য।
এদিকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সময় গণতন্ত্রের পক্ষে প্রচারের পুরস্কার হিসেবে সু চিকে বেশ কিছু সম্মাননা দিয়েছিল যুক্তরাজ্যের কিছু প্রতিষ্ঠান। এখন তারা একযোগে সেগুলো পর্যালোচনা বা বাতিলের কথা ভাবছে। ঠিক সে সময়ে ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইউনিসন পুরস্কার বাতিলের ঘোষণা এলো।
যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিসন পুরস্কার বাতিলের পাশাপাশি এক ঘোষণায় বলেছে, সু চিকে দেওয়া সম্মানসূচক সদস্যপদও বাতিল করছে তারা। এ ছাড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুর্দশা লাঘবে আরো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেয় সংগঠনটি।
ইউনিসনের প্রেসিডেন্ট মার্গারেট ম্যাককি গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা ভয়াবহ অবস্থায় আছে। অং সান সু চির সম্মানসূচক সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে এবং আমরা আশা করি, তিনি আন্তর্জাতিক চাপের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন।’ এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত হামলা ও জাতিগত নির্মূলকরণের কারণে যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারে একসময়কার বিরোধী দলে থাকা সু চিকে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি বাতিলের বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, মিয়ানমারে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অব্যাহত উদ্বেগের সঙ্গে একাত্ম বিশ্ববিদ্যালয়টি। গত ৩০ বছর যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো, বাথ ও ক্যামব্রিজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে সম্মাননা পেয়েছেন অং সান সু চি।
মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল জিতেন অং সান সু চি। এরপর প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার অযোগ্য হওয়ার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। সেসময় থেকেই তিনি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শকের পদে আছেন।
"