হাসান ইমন
‘ঘুমেও সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতি ফিরে আসে’
ঢাকা মহানগর (উত্তর) মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলের সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহিদা তারেক দিপ্তি। ২১ আগস্টের ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বোমা হামলার
ঘটনায় স্পিøন্টারের ক্ষত, এখনো দগদগে ঘাঁ, যা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এখনো ঘুমের মধ্যে আতকে উঠি ভয়ে। দলীয় কর্মকান্ড কিংবা সাংগঠনিক তৎপরতার মধ্যে থাকলেই কেবল ভুলে থাকতে পারি ওই দিনের দুঃসহ সেই স্মৃতিগুলো। কিন্তু যখন সব ধরনের কোলাহল ছেড়ে আপন নিবাসে ফিরি এবং একা থাকি, তখন শারীরিক পীড়া জেগে ওঠে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তবে সান্ত¡Íনা খুঁজে পাই এই ভেবে যে, আইভি আপাসহ একে একে ২৪ জন চিরতরে না-ফেরার দেশে চলে গেছে; আমিও তাদের কাতারে থাকতে পারতাম। ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছি এটা কম কী।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গত শনিবার রাতে স্বপ্নের মধ্যে দেখতে পেলাম, সারি সারি লাশ এবং সবগুলোই আগুনে পোড়া ও ঝলসানো। চারদিকে আর্তচিৎকার। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি নিজ বিছানায় শুয়ে আছি। ঘটনাটি স্বামীর সঙ্গে শেয়ার করি। মনে মনে ভাবতে থাকি, আরেকটি ২১ আগস্ট কি দেখতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং হাওয়া ভবনের মদদে খালেদা জিয়ার নির্দেশে ওই দিন ইতিহাসের জঘন্যতম হামলাটি চালানো হয়েছিল। তারা চেয়েছিল তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু হত্যাকারীদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরে থাক, তাদের সংসদেও ঠাঁই হয়নি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জাতির জন্য একটি বিভীষিকাময় দিন।
শাহিদা তারেক বলেন, নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) প্রতি কৃতজ্ঞ। নেত্রী বেঁচে আছেন বলেই দল মূল্যায়ন করেছে। দলীয় সভানেত্রী এমপি বানিয়েছেন। আহত অনেককে ১০ হাজার টাকা করে সঞ্চয়পত্র করে দিয়েছেন। আমাকে এমপি নির্বাচিত করায় ওই তালিকায় আমাকে রাখা হয়নি। তবে এমপি হওয়ার মাধ্যমে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি। অনেক সুবিধা ভোগ করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে নেত্রীর অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সবাইকে সমানদৃষ্টিতে দেখার মানসিকতার জন্য। তাই যত দিন বেঁচে থাকব নেত্রীর সঙ্গে থাকব।
তিনি আরো বলেন, এখন দেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে নেত্রী কাজ করছেন। আশা করি, সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নেত্রীর ওপর একাধিক মামলাসহ সব মামলার বিচার হবে। আর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা এ মেয়াদেই সম্পন্ন হবে ইনশা আল্লাহ। বিচারের মাধ্যমে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে এবং আমরা যারা গ্রেনেড হামলার পরও বেঁচে আছি, ক্ষতগুলো কিছুটা হলেও কমবে।
শাহিদা তারেক দিপ্তি বলেন, ডান পা ও হাত এখনো অবশ। মাথায় কয়েকটি স্পিøন্টার ছিল। সম্প্রতি ভারতে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে এসেছি। দলীয় সভানেত্রী সব সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহতদের খোঁজখবর নেন, এটাই বড় সান্ত¡Íনা।
"