নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ আগস্ট, ২০১৭

‘জঙ্গি’ সাইফুল ছিলেন শিবিরের বাবা জামায়াতের : পুলিশ

চাকরি খোঁজার কথা বলে গত ৭ আগস্ট বাড়ি ছেড়েছিল জঙ্গি সাইফুল ইসলাম। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায় সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাটি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, সাইফুল স্থানীয়ভাবে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বাবা আবুল খায়ের মোল্যাও স্থানীয় জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম।

সাইফুলের ছোট বোন ইরানি খাতুন জানিয়েছেন, ৭ আগস্ট বাড়ি ছাড়লেও তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না তাদের। খুলনা ছাড়ার সময় সাইফুল স্বজনদের জানিয়েছিল ঢাকায় চাকরি খুঁজতে যাচ্ছে। তবে সর্বশেষ গত রোববার মোবাইল ফোনে সাইফুলের সঙ্গে তার বানের কথা হয়েছিল। এরপর আর কোনো যোগাযোগ নেই, ফোনও বন্ধ ছিল। আজ (গতকাল) সকালে গ্রামে আত্মীয়স্বজনদের মাধ্যমে সাইফুলের নিহত হওয়ার খবর পান তারা। সোমবার তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল।

এদিকে, পুলিশের অভিযানে জঙ্গি সাইফুল নিহত হওয়ার পর তার বাবা আবুল খায়েরকে ডুমুরিয়া থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়েও দেওয়া হয়। তা ছাড়া ঢাকায় সাইফুলকে আশ্রয়দাতা সন্দেহে ডুমুরিয়া থেকে দুই যুবককে আটকও করা হয়। তারা হলেন-একই গ্রামের আবু ওয়াহেদের ছেলে মো. সানি (২২) ও জালাল সরদারের ছেলে ইহসান (২১)। ডুমুরিয়া থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, সাইফুলের বাবা ইউনিয়ন পর্যায়ে জামায়াতের রুকন। এ ছাড়া ইউনিয়ন জামায়াতের কোষাধ্যক্ষও তিনি। একটি মসজিদে ইমামতিও করেন।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর পান্থপথে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের চারতলায় পুলিশের ‘অপারেশন আগস্ট বাইট’ নামে এক জঙ্গি অভিযানে নিহত হয় সাইফুল ইসলাম। অভিযান শেষে সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, যখন পুলিশ অপারেশন শুরু করবে, তখন সে একটি এক্সপ্লোসিভ ব্লাস্ট করে পুরো দরজা ভেঙে ফেলে। আরেকটি বোমা ব্লাস্ট করতে যাবে, তখন পুলিশ গুলি করে। তার সঙ্গে সঙ্গে সুইসাইডাল ভেস্টের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সে আত্মঘাতী হয়।

সাইফুল ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘এই জঙ্গির তথ্য প্রাথমিকভাবে আমরা পেয়েছি। তার নাম সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায়। তার বাবা একটি মসজিদের ইমাম। সে মাদরাসার ছাত্র ছিল, খুলনার বিএল কলেজেরও ছাত্র ছিল এবং ছাত্রশিবির করত। জামায়াত-শিবির না হলে জাতির পিতার মৃত্যুদিবস জাতীয় শোক দিবসে আরেকটি ঘটনা ঘটাতে পারত না।’

জানা গেছে, সাইফুলের বাবা আবুল খায়ের মোল্লা নোয়াকাটি গ্রামে মাঠের হাট মসজিদের ইমাম। সাইফুলের মা বাক্?প্রতিবন্ধী। আবুল খায়েরের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সাইফুল সবার বড়। পাইকগাছার একটি মাদরাসা থেকে হাফিজি পাস করেন। খুলনার বিএল কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। পড়াশোনার জন্য খুলনার একটি মেসে থাকতেন। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষার সাইফুলের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে তার জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৯৬ সালের ১৩ অক্টোবর। সে হিসাবে তার বয়স প্রায় ২১ বছর।

গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ি এলে মানুষের সঙ্গে খুব কম মিশতেন সাইফুল। কারো সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। ঘরে একাই থাকতেন তিনি। আচরণে বেশ ভদ্র ও নম্র ছিলেন। কিন্তু তিনি ছাত্রশিবির করতেন কি না-এ ব্যাপারে কোনো তথ্য এলাকাবাসীর কাছ নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist