বিবিসি বাংলা
বিবিসিকে খাদ্যমন্ত্রী
চালের সংকট কৃত্রিম
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ লাখ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে, ফলে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চালের বাজারে সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এবারের বোরো মৌসুমে এক কোটি ৯১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল; কিন্তু কয়েকটি কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। তিনি মূলত তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেন-হাওরে ফসলহানি, কয়েক জেলায় ধানক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ এবং অতিবৃষ্টি। কামরুল বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এসব কারণে উৎপাদন ১৫-২০ লাখ টন কম হবে-কমপক্ষে। এটা বেশিও হতে পারে।’
বাংলাদেশে এরই মধ্যে চালের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। যে মোটা চাল কিছুদিন আগেও কেজিপ্রতি ৩৫ টাকার মতো ছিল, তার দাম এখন কমবেশি ৪৮ টাকা। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি সংকটে পড়েছেন, আর চালের দাম নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য মূলত দায়ী করছেন চাল ব্যবসায়ীদের। তিনি বলেন, ধানের উৎপাদন কম হওয়ার সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আর কিছু অসাধু মিল মালিক যোগসাজশ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি করেছে।
মন্ত্রী কামরুল ইসলাম চাল নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টিতে গণমাধ্যমকেও দুষেছেন। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য হলো, ‘সঠিক সংবাদ পরিবেশন করা ভালো, তবে অতিরঞ্জন অনেক সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করে, যা শুভ নয়।’ খাদ্যমন্ত্রী জানান, সরকারের পক্ষ থেকে চালকলের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং দাম কমাতে তাদের চাপও দেওয়া হয়েছে। তবে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে মূলত নির্ভর করছে আমদানির ওপর। কামরুল বলেন, তার সাম্প্রতিক ভিয়েতনাম সফরের সময় তিনি সেখান থেকে চার লাখ টন চাল আমদানির বিষয় চূড়ান্ত করেছেন। এ ছাড়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকেও চাল আমদানির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার চাইছে সব মিলিয়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করতে।
বাংলাদেশের মানুষের মূল খাদ্য ভাত, আর তাই চালের দাম দেশটিতে সব সময় একটি রাজনৈতিক স্পর্শকাতর বিষয়। তবে চালের দাম সরকারের জন্য ‘রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ হবে না বলেই বিশ্বাস করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সংকট আছে আমি স্বীকার করি। তবে আমরা যদি আমদানি করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না পারতাম তাহলে সংকটটা সৃষ্টি হতো তিন-চার মাস পরে। এখন যে সংকট সেটা কৃত্রিম সংকট।’
"