নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ মে, ২০১৭

ভাস্কর্য অপসারণ : প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা

গ্রেফতার চারজন কারাগারে

সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সময় গ্রেফতার বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাদের জামিন শুনানির জন্য আজ রোববার দিন ধার্য করেন।

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি মোর্শেদ হালিম, ছাত্র ইউনিয়নকর্মী জয় এবং উদীচীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফ নূরকে পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল শনিবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক এই আদেশ দেন।

ওই চারজনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী সোহেল আহমেদ ও জীবনানন্দ জয়ন্ত। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মকবুলুর রহমান। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে, লিটন নন্দীসহ চারজনের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার গ্রেফতার চারজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে আজ রোববার জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। হেফাজতে ইসলামের দাবির মুখে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক লেডি জাস্টিসের আদলে গড়া ভাস্কর্যটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সরানো হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে বাম সংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ব্যানারে একটি মিছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে এগোতে চাইলে শিশু একাডেমির সামনে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশ প্রথমে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে; পরে জলকামান থেকে পানি এবং রবার বুলেটও ছোড়া হয়। সেখান থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। রাতে তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন এসআই মোহাম্মদ মোফাক্কারুল ইসলাম। শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, মামলার এজাহারে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগের পাশাপাশি দ-বিধির ৩০৭ ধারায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’ এর আদলে এই ভাস্কর্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠন ভাস্কর্যটির বিরোধিতায় নামে। গত ১১ এপ্রিল হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী নেতৃত্বাধীন এক দল ওলামার সঙ্গে গণভবনে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাস্কর্যটি সরাতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে এর নান্দনিক ‘ত্রুটির’ পাশাপাশি জাতীয় ঈদগাহের কাছে অবস্থানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনাকারীরা বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে মৌলবাদীদের সঙ্গে আপস করছে সরকার এবং এতে ধর্মীয় মৌলবাদ আরো উৎসাহিত হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist