নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষার্থী-পুলিশ দফায় দফায় সংঘর্ষ
চার দফা দাবিতে আন্দোলনে নামা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শাহবাগে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর ডিপ্লোমা মেডিক্যাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে টিএসসি মোড় থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় পুলিশের জলকামান ও টিয়ার শেলের জবাবে আন্দোলনকারীদের ঢিল ছুড়তে দেখা যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এলেও বেলা দেড়টা দিকে ওই রাস্তা দিয়ে মিছিল নিয়ে আসা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কর্মীদের পুলিশ বাধা দিলে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখানে অবস্থানরত ম্যাটস শিক্ষার্থীও সে সময় সংঘর্ষে যোগ দেয়।
এরপর বেলা আড়াইটার দিকে জাদুঘরের সামনের রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে তৃতীয় দফা সংঘর্ষে জড়ান ছাত্রফ্রন্টের কর্মীরা। ডিপ্লোমা মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশের টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও লাঠিপেটায় তাদের ৩০০ কর্মী আহত হয়েছেন; আটক করা হয়েছে অন্তত ১০০ শিক্ষার্থীকে।
পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মো. মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ সময় পুলিশেরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য ছিল মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যাওয়া অথবা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বসে পড়া।
মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা, ‘মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড বাংলাদেশ’ নামে স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন, কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকারিভাবে দশ গ্রেডে নিয়োগ, বেসরকারি ক্লিনিক-হাসাপাতালে ম্যাটস থেকে পাস করা ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের জন্য পদ সৃষ্টি এবং ইন্টার্নশিপে ভাতার দাবিতে বৃহস্পতিবার প্রধামন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে ‘লংমার্কের’ কর্মসূচি দেয় ডিপ্লোমা মেডিক্যাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের। ঘোষণা অনুযায়ী তারা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার সময় টিএসসি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ জলকামান থেকে রঙিন পানি ও টিয়ার শেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এই সংঘর্ষের মধ্যে ওই এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। স্কুল ফেরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকদের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে দেখা যায়।
থমথমে এই অবস্থার মধ্যেই সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কর্মীরা অপরাজেয় বাংলার সামনে সমাবেশ করে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ঘেরাওয়ের জন্য মিছিল নিয়ে রওনা হন।
পাবলিক লাইব্রেরির সামনে পুলিশ তাদের বাধা দিলে আরেক দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে কাছেই অবস্থানরত ম্যাটস শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে যোগ দেয়।
এ সময় রাস্তায় থাকা বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুরের শিকার হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। পরে পুলিশের জলকামান আর টিয়ার শেলের মুখে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন। বেলা আড়াইটার দিকে ছাত্রফ্রন্টের কর্মীরা আবারও অগ্রসর হতে চাইলে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়।
"