আদালত প্রতিবেদক
ফটো সাংবাদিক আফতাব হত্যায় পাঁচজনের ফাঁসি
একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় পাঁচজনের ফাঁসি ও একজনের সাত বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় দেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- গাড়িচালক মো. হুমায়ুন কবীর, বেলাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, মো. রাজু মুন্সী ও মো. রাসেল। এ ছাড়া মো. সবুজ খানকে সাত বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা রোডের ৬৩ নম্বরের নিজ বাড়িতে খুন হন আফতাব। পরদিন সকালে তার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৬ ডিসেম্বর নিহতের ছেলে মনোয়ার আহমেদ বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ২৫ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-৩-এর উপপরিদর্শক আশিক ইকবাল।
রায়ে বলা হয়, সবুজ শুধু বাড়ি পাহারার দায়িত্বে ছিল। খুনের সঙ্গে সে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিল না। তার বয়স ১৮। বয়স বিবেচনায় তাকে স্বল্পমেয়াদের শাস্তি দেওয়া হলো। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। আসামিপক্ষ কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে গত ২০ মার্চ বিচারক রায়ের জন্য ২৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।
আসামিদের মধ্যে রাজু মুন্সী ও মো. রাসেল পলাতক। বাকি আসামিরা রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সাজা শুনে আসামি সবুজকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেলেও সর্বোচ্চ সাজার রায় পাওয়া পাঁচ আসামিকে নির্বিকার দেখা গেছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আফতাবের মতো প্রবীণ ও বিচক্ষণ সাংবাদিকের এ রকম মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি।
আফতাবের বড় মেয়ে আফরোজা আহমেদ বন্যা রাযের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সবুজের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আর দুই পলাতক আসামিকে তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করা হোক।
২০০৬ সালে একুশে পদক পাওয়া আফতাব দীর্ঘদিন ইত্তেফাকের জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের গঙ্গাচড়ায়। তার দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে মনোয়ার আহমেদ থাকেন যশোরে। আর মেয়ে আফরোজা আহমেদ তার স্বামী ফারুক আহমেদের সঙ্গে থাকেন গাজীপুরে।
"