নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ মার্চ, ২০১৭

প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত শিক্ষকরাই!

ফাঁস হয় তিন ধাপে, পাঁচ হাজার টাকায় মেলে প্রশ্নপত্র!

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে কলেজ প্রিন্সিপাল ও শিক্ষকরা জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তিনটি ধাপে সেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছায়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার আবদুুল বাতেন।

এর আগে গত সোমবার রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সাতরাস্তা মোড়ে কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের সামনে থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলো আশুলিয়ার গাজীরচট এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোজাফফর হোসেন, টঙ্গীর কোনিয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হামিদুর রহমান তুহিন, সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, এ এম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক আতিকুল ইসলাম, অফিস সহকারী আবদুুল মজিদ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চারজন শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন আকাশ ওরফে আদু ভাই, সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন ও তানভীর হোসেন।

তাদের কাছ থেকে জেএসসি-২০১৬ (বাংলা দ্বিতীয় পত্র, গণিত, ইংরেজি, কৃষিশিক্ষা, চারু ও কারুকলা), এইচএসসি-২০১৬ (উচ্চতর গণিত প্রথম পত্র, রসায়ন, জীববিজ্ঞান), এসএসসি-২০১৭ (বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র, গণিত, পদার্থ) সালের পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের ভুয়া প্রশ্নপত্র, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁসের গুজবসংবলিত স্ক্রিনশট এবং ৯টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে।

গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুুল বাতেন জানিয়েছেন, পাবলিক পরীক্ষার যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় তিনটি ধাপে। প্রথমত, যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে থাকেন তাদের মধ্যে কেউ প্রশ্ন ফাঁস করেন। দ্বিতীয়ত, যে জায়গা থেকে প্রশ্নপত্র মুদ্রণ হয় (বিজি প্রেস) সেখান থেকে। তৃতীয়ত, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পরীক্ষার কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার সময়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবদুুল বাতেন আরো জানান, প্রশ্ন সংগ্রহ করার পর চক্রের সদস্যভুক্ত শিক্ষকরা উত্তর তৈরি করে তা ফেসবুক গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে দেন। ওই গ্রুপের অ্যাডমিনের নাম জি এম সাগর। ওই গ্রুপে দুই হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে। উত্তরসহ প্রশ্নপত্র নিতে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা দিলেই মেলে কাক্সিক্ষত সেই প্রশ্নপত্র। বিভিন্ন নামে ফেসবুক আইডি, ইমো, ওয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীসহ সারা দেশের স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পাবলিক পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র অনলাইনে পোস্ট করে আসছিল চক্রটি।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসে বিজি প্রেস, জেলার ডিসি কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে অবগত করা হবে। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœœ করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist